সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসীদের মধ্যে কানাডা থেকে চলে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী কানাডা ছেড়ে গেছে। সমীক্ষায় দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করার উপায় হিসেবে নতুনদের ধরে রাখার জন্য সরকারের অগ্রাধিকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ইনস্টিটিউট ফর কানাডিয়ান সিটিজেনশিপ এবং কানাডার কনফারেন্স বোর্ডের পরিচালিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, কানাডা ছেড়ে যাওয়া অভিবাসীদের সংখ্যা কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে হঠাৎ করে বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাপ্ত উপাত্ত এমনটাই বলছে।
আরও পড়ুন>> আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে যারা গর্তে ঢুকেছে, তাদের বের করে শায়েস্তা করা হবে: তথ্যমন্ত্রী
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, কানাডায় আগমনের চার থেকে সাত বছরের মধ্যে অগ্রবর্তী অভিবাসনের ঝুঁকি বিশেষভাবে বেশি।
সমীক্ষা অনুসারে, গড়ে দশমিক ৯ শতাংশ লোক যাদের ১৯৮২ সালে বা তার পরে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তারা প্রতি বছর কানাডা ছেড়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে তা বেড়ে ১ দশমিক ১৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রকৃত সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদনের গবেষকরা ৩১ অক্টোবর একটি সংবাদ সম্মেলনের সময় বলেছিলেন, প্রায় ৬৭ হাজার ব্যক্তি কানাডা ছেড়েছেন। ২০১৯ এবং ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজার। সমীক্ষায় আরও হাইলাইট করা হয়েছে যে অভিবাসীদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সাধারণত ১৯৯০ এর দশক থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতিবেদনে কানাডার নতুনদের প্রত্যাশা পূরণ না করার সম্ভাব্য পরিণতিগুলোর ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে যারা আবাসনের ক্রয়ক্ষমতার অবনতি, সংকীর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং অন্যান্যদের মধ্যে স্বল্প কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর মতো চ্যালেঞ্জের সঙ্গে লড়াই করছে।
কানাডিয়ান সিটিজেনশিপের ইনস্টিটিউটের সিইও ড্যানিয়েল বার্নহার্ড বলেছেন, ‘কানাডা যেহেতু আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে তীব্র ঘাটতি পূরণের জন্য অভিবাসীদের ওপর বেশি বেশি নির্ভর করে, সেহেতু তাদের ধরে রাখার ক্ষমতা আমাদের জাতীয় স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সহজ কথায়, কানাডা যদি নতুনদের সুবিধা দিতে না পারে এবং তাদের পাসপোর্টে ও তাদের মন থেকে কানাডিয়ান হয়ে উঠতে সাহায্য করতে না পারে, আমরা শীঘ্রই অতীত কালের আমাদের সমৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে পারি।’
কানাডার কনফারেন্স বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক স্টেফান ফোর্নিয়ার বলেন, ‘কানাডার ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি অভিবাসনের ওপর নির্ভর করে। এই ক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা দেখায় যে অভিবাসনের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জড়িত। এমনকি অভিবাসী কমে গেলে শ্রমের ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায়। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, অভিবাসীদের আকর্ষণ করা সমীকরণের একটি অংশ মাত্র, তারা কানাডায় এলে তাদের ধরে রাখতে হবে।’
ইবাংলা/এসআরএস