নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে হারলো বাংলাদেশ

প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় পাওয়ায় আবার সিরিজ জয়ের সুযোগ এসেছিলো বাংলাদেশের সামনে। তবে শেষ পর্যন্ত সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের। বলা যায়, ফিলিপস বাধায় সিরিজ জিততে পারেনি শান্ত-তাইজুল-মিরাজরা।

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ধসের পর বীরদর্পে ব্যাটিং করে দলকে লিড এনে দিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। দ্বিতীয় টেস্টেও ব্যাটিং ধস সামলে স্যান্টনারের সাথে জুটি গড়ে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন। এই জুটিতে ভর করে কিউইরা জিতেছে ৪ উইকেটে। ফলে সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের দেওয়া ১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও টম লাথাম ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই এ জুটিতে আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের পেসে পরাস্ত হয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন কনওয়ে। আউট হওয়ার আগে ২ রান করেন তিনি।

আরও পড়ুন>> আইসিইউতে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু তিনিও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে তাইজুলের বলটি মিস করেন। পরে সেই সুযোগে স্ট্যাম্পিং করেন সোহান। এরপর বাইশ গজে নিজেদের মেলে ধরার আগেই সাজঘরের পথ ধরেছেন হেনরি নিকোলস । নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে কিউইরা।

এরপর টম লাথামের সঙ্গী হন ড্যারিল মিচেল। এই জুটিতেই ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা সাজায় কিউইরা। তবে খুব একটা পার্থক্য গড়তে পারেননি লাথাম-মিচেল। মিরাজের হাতেই বিদায় নেন লাথাম। ৬০ বল খেলে ফেলা লাথাম প্রথম স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ২৬ রান।

এমন হতাশার পর টম ব্লান্ডেল এসে সেটি আরও বাড়িয়ে দেন। মিরাজের আগের ওভারেই ব্লান্ডেলের সাজঘরে ফেরা হয়ে যেত। অল্পের জন্য এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্লান্ডেলকে পরের ওভারে সোহানের গ্লাভসে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তাইজুল।

এদিকে প্রথম ইনিংসে ভয়ংকর হয়ে ওঠা গ্লেন ফিলিপস এবার ফিরতে পারতেন ডাক হয়ে। যদি না স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর হাত থেকে ক্যাচটা ফস্কে যেত। তবে শান্ত তৃপ্তি পেলেন মিচেলের ক্যাচ লুফে নিয়ে। মিরাজের বলেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাটে পাননি বল, এর আগেই তার গ্লাভসে হালকাভাবে স্পর্শ করে যায়।

আম্পায়ার বুঝতে না পারলেও বাংলাদেশ দল মাতে উদযাপনে। এরপর শান্ত রিভিউ নিয়ে ১৯ রান করে ফেলা মিচেলের আউট নিশ্চিত করেন। ৬৯ রানের আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। সপ্তম উইকেটে গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার ২১ রানের জুটি গড়ে চা বিরতিতে যায়।

তৃতীয় সেশনে মাঠে নেমেই জয়ের জন্য প্রয়োজন বাকি ৪৭ রান তুলে নেয় ফিলিপস-স্যান্টনার জুটি। ৪০ ওভারেই জয় তুলে নিয়ে সিরিজ ড্র করে কিউইরা। পুরো ম্যাচে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ও বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন ফিলিপস।

এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। তবে ম্যাচের শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দেন জয়। অ্যাজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণিতে ২ রানেই থামেন এ ডানহাতি ব্যাটার।জয়ের বিদায়ে উইকেটে আসেন টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত। অতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তিনিও নিজের ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হন।

টাইগার দলপতিকে থামিয়েছেন কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। আউট হওয়ার আগে ১৫ রান করেন এ বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর ক্রিজে আসেন মুমিনুল হক। তবে নিজের ব্যক্তিগত ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। অ্যাজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণিতে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন এ ব্যাটার। পরে বাইশ গজে এসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিকুর রহিম।

স্যান্টরারের বলে আউট হওয়ার আগে ৯ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। এরপর শুধু আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। এরপর শুধু আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। ব্যাট হাতে দুই অঙ্কের ঘর ছোঁয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন শাহাদাত হোসেন দিপু ৪, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩, নুরুল হাসান সোহান ০ ও নাঈম হাসানরা ৯।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বড় লক্ষ্য থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নিয়েছেন টাইগার ওপেনার জাকির হাসান। তার ফিফটিতে ভর দিয়েই লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করেছে শান্ত বাহিনীরা। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ রানে বাংলাদেশের ইনিংস ধামলে ১৩৬ রানের লিড পায় টাইগাররা।

ইবাংলা/এসআরএস

বাংলাদেশ