কপ-২৮: জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে শেষ মুহূর্তেও প্রচেষ্টা

ইস্রাফিল হাওলাদার, দুবাই থেকে

জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক কপ-২৮ সম্মেলনের পর্দা নামছে আজ মঙ্গলবার। এর আগে গতকাল সোমবার জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের নেতারা। এ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ আগে থেকেই চলছিল। তবে বরাবরের মতোই এবারও এর বিরোধিতা করছে জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো।

সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সম্মেলনস্থলে যান জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে এবারের কপ সম্মেলনে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আস্থা রেখে আরও তৎপরতার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

বৈশ্বিক জলবায়ু সংকটের মধ্যে বড় বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতার দ্বীপরাষ্ট্রগুলো। জলবায়ু সংকটের জন্য মূলত দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি। কপ সম্মেলনে এ জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ওই দ্বীপরাষ্ট্রগুলো। সে অনুযায়ী সম্মেলনের এবারের আয়োজক দেশ আবর আমিরাতকে প্রথম জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মুখ ফেরাতে হবে।

আরও পড়ুন>>  স্ত্রীকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বানালেন জিএম কাদের

তবে বাদ সেধেছে প্রতিবেশী সৌদি আরবের মতো বৃহৎ জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো। সমমনাদের জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দিতে দৌড়ঝাঁপ করছে রিয়াদ। কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক কর্মকর্তা সিমন স্টিয়েল সব পক্ষকে বলেছেন, চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ‘অপ্রয়োজনীয় কৌশলগত বাধা’ না দিতে।

এ নিয়ে গুতেরেসের ভাষ্য, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অর্থ এই নয় যে সব দেশকে একসঙ্গে এই জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তিনি এ-ও বলেন, যে চুক্তিই করা হোক না কেন, তাতে শিল্প–পূর্ব যুগের পর থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্যটি থাকতে হবে।

২৮ বছরের ইতিহাসে কালেভদ্রে কপ সম্মেলন নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়েছে। এবারের সম্মেলন সময়মতো শেষ করতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কপ-২৮–এর সভাপতি সুলতান আল জাবের। আজ নতুন একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তাবের পথে এগোচ্ছেন।

এ নিয়ে পরিবেশ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা ডব্লিউডব্লিউএফের কর্মকর্তা মানুয়েল পুগলার-ভাইদাল বলেন, প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের আহ্বান এখন জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কারণ, প্যারিস চুক্তির আওতায় থাকা দেশগুলোকে ২০২৫ সাল নাগাদ কার্বন নির্গমন কমাতে জাতীয় পরিকল্পনা দাখিল করতে হবে। পরিকল্পনা দাখিলের পরবর্তী সময়সীমার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যদি এবারের কপ সম্মেলন থেকে শক্তিশালী অঙ্গীকার না পাওয়া যায়, তাহলে জলবায়ু রক্ষায় আমরা আরও সাত বছর হারাব।’

সব মিলিয়ে বড় চাপটা কপ-২৮–এর সভাপতি সুলতান আল জাবেরের কাঁধে। যদিও তিনি এবারের কপে ঐতিহাসিক এক চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ‘অনিবার্য’ হয়ে পড়েছে।

ইবাংলা/এসআরএস

কপ-২৮