তেঁতুল বদহজম দূর করে

কি! শুনেই লালা ঝরতে শুরু করল? যাই হোক, তেঁতুল খেতে ভীষণ টক। তেঁতুলে যে রয়েছে হাজারও গুণ। চলুন এক দমে ছোট্ট করে জেনে নেই তেঁতুলের কি কি গুণ রয়েছে। পাকা তেঁতুলের স্বাদ হয় টক-মিষ্টি। এতে রয়েছে চিনি, ভিটামিন বি এবং ক্যালসিয়াম।

তেঁতুলে আছে টারটারিক এসিড- আর সেকারণেই এটি খেতে টক লাগে। এই টারটারিক এসিড থাকার কারণে এটি  খাবার হজমে সহায়তা করে। পেটের গ্যাস এবং হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী। রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর কাজে আধুনিককালে তেঁতুল ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানা যায়। জ্বরে ভোগা রোগীর জ্বর কমানোর জন্য কোনো কোনো অঞ্চলের মানুষ তেঁতুল ব্যবহার করে, মানে খেয়ে থাকে। এছাড়াও স্কেলিটাল ফ্লুরোসিস রোগের প্রকোপ হ্রাস করতেও এটি ব্যবহƒত হয়। পাকা তেঁতুল ভিজিয়ে রেখে সকালে শুধু পানি খেলে হাত-পায়ের জ্বালা কমে। আর প্রচলিত বিশ্বাস, তেঁতুল গোলানো পানি নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ বা প্রেসার থাকে নিয়ন্ত্রণে।

আরও পড়ুন>> গোয়াইনঘাটে সিএনজি ট্রাক্টর সংঘর্ষ, নিহত ২

দেখা যায়, পুরনো তেঁতুলের কার্যকারিতা বেশি। যদি পেট ফাঁপার সমস্যা থাকে এবং বদহজম হয়, তাহলে পুরনো তেঁতুল এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে সামান্য লবণ, চিনি বা গুড় দিয়ে খেলে পেট ফাঁপা এবং বদহজমের সমস্যা দূর হয়। এটি ক্ষুধা বাড়ায়। শরীরে অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে তেঁতুলের পাতা বেটে মরিচ ও সামান্য লবণ দিয়ে বড়া তৈরি করে পান্তাভাতের সঙ্গে খান।

তেঁতুলের সঙ্গে যদি রসুনবাটা মেশানো হয়, তাহলে তা রক্তের চর্বি কমানোর কাজে ভালো ফল দেয়। ম্যালেরিয়া জ্বর কমাতে তেঁতুল পাতার চা খান। কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। তেঁতুল মুখে ঘা এবং চামড়ার জ্বালাপোড়া সারাতে সাহায্য করে। তেঁতুল শিশুদের কৃমির সমস্যা দূর করে। অনেক ভালো ভালো গুণ থাকলেও দীর্ঘদিন বেশি মাত্রায় তেঁতুল খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। যারা বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন দীর্ঘদিন, তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ শুনে তেঁতুল খাবেন। যারা দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে তেঁতুল খাবার ব্যাপারে কিছু সাবধানতা থাকতে পারে।

যেমন- তেঁতুল নির্দিষ্ট ওষুধের ক্ষেত্রে রক্তপাত বৃদ্ধি করতে পারে, নিয়মিত অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে, এটি থেকে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, এতে উচ্চমাত্রার এসিড থাকায় দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খেলে পিত্তপাথর হতে পারে, যেহেতু তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালিতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা থাকে। তেঁতুল যেমন ভালো, তেমনি তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই পরিমাণ মতো তেঁতুল খেতে হবে।

ইবাংলা/এসআরএস