একটি মেধাহীন জাতি তৈরি করার জন্য সরকারি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষানীতি নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘শিক্ষানীতির কোনও মৌলিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। পাসের হার বাড়িয়ে দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। শিক্ষার্থী উত্তরপত্রে কিছু লিখুক আর না লিখুক তাকে পাস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের। বলা হয়েছে, ফেল করানো যাবে না। অথচ পড়াশোনা করেই পাস করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘শিশুশ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। একেকবার একেক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে হযবরল করা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্কুলমুখী না করে কোচিং সেন্টার ও গাইড বইমুখী করা হয়েছে। সুতরাং শিক্ষা ব্যবস্থায় এহেন অরাজকতায় কখনোই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি ঘটবে না। একটি মেধাহীন জাতি তৈরি করার জন্য সরকারি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হচ্ছে।’
মাতৃভাষা, মাতৃভূমি ও দেশপ্রেম প্রকাশে সরকারিভাবে ‘কপটতা ও রাজনৈতিক শঠতা উৎসাহিত করা হচ্ছে বলেও এ সময় অভিযোগ করেন রুহুল কবির। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক মর্যাদা চাই, জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা চাই ইত্যাদি সরকারি প্রোপাগান্ডা অব্যাহত রয়েছে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও বাংলা ভাষা চর্চার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, বর্তমান দখলদার শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য আন্তপ্রাণ দেখালেও বাস্তবে দেশকে পরিণত করা হচ্ছে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির পরিচর্যা কেন্দ্র হিসেবে। আত্মনির্ভরশীলতার স্থলে পরনির্ভরশীলতাকে করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতি। এখন ভারত থেকে কচুরমুখীও আমদানি করতে হয় আমাদের।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রকাশনা শিল্পকে ধ্বংস করে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক পর্যন্ত এখন ছেপে আসে ভারত থেকে। পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত অনেক প্রবন্ধ কবিতায় বানান ভুলে ভরা। বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা ভাষার চর্চাকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কায়দায় পার্শ্ববর্তী দেশের রাষ্ট্রভাষার চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে নিরন্তরভাবে।