রাজধানীর গুলশান, ধানমণ্ডি, মিরপুর ও উত্তরার প্রায় অর্ধশত রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব খাবারের দোকানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে কয়েকটি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক, কর্মীসহ অন্তত ২৮ জনকে আটক করে পুলিশ।
নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে এসব রেস্টুরেন্ট-ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা দেখতেই অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ধানমণ্ডি এলাকার ১৯টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি না থাকা, সিঁড়ি আটকে রান্নাঘর বসানো ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় এসব খাবারের দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
রাতে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, অভিযান চালিয়ে কয়েকটি খাবারের দোকানের ব্যবস্থাপকসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান এলাকায় প্রায় ১০টি খাবারের দোকানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখার চেষ্টা করেছি, খাবারের দোকান থাকা ভবনের জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি রয়েছে কি না। সিঁড়িতে কোনো কিছু রাখা হয়েছে কি না, সেটা দেখছি। দু-একটি ছাড়া সবকটির পরিবেশ ছিল সুন্দর। তাদের ব্যবস্থাপনা দেখে আমরা সন্তুষ্ট।
উত্তরা এলাকার অন্তত ২০টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতীম।
এ ছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে বসুন্ধরা এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে ভাটারা থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে ভাটারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, অভিযানে খোঁজার চেষ্টা করেছি রেস্টুরেন্টে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে কি না এবং যথাযথ অনুমতি আছে কি না। এর মধ্যে ফুটপাত দখল করে বিভিন্নভাবে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করার দায়ে তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হচ্ছে। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা গেলেই আমরা সতর্ক করছি। কিছু কিছু জায়গায় আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। শুধু ধানমন্ডিতেই ১৫টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।তাদের মধ্যে ৪৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত ১৩ জনের মধ্যে ৬ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে।