ভিওআইপি ব্যবসা: এক চক্রের হাতে সাড়ে ১১ হাজার সিম, গ্রেপ্তার ২

সরকারি নিয়মানুযায়ী একজন ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। কিন্তু গাজীপুরের টঙ্গীতে ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। একটি চক্র নিজেরাই ব্যবহার করছিল সাড়ে ১১ হাজার সিম। স্থাপন করেছিল অবৈধ টেলিযোগাযোগব্যবস্থা। প্রতিদিন সেখানে গড়ে ১ লাখ ২৫ হাজার মিনিট আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেট করা হতো। এতে প্রতিদিন তাদের আয় হতো ১ লাখ টাকা।

গাজীপুরের টঙ্গীতে শনিবার (২৩ মার্চ) রাত থেকে রোববার (২৪ মার্চ) সকাল পর্যন্ত র‍্যাব-১ অভিযান চালিয়ে ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) সরঞ্জামসহ ওই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

আরও পড়ুন >>  ঢাবিতে বর্ষবরণে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মো. তাজুল (৪০) ও ফরিদপুর সদর উপজেলার মো. হারুন। তাঁরা দুজনই মধুমিতা এলাকার অগ্রণী টাওয়ারের ১২ তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। সেখান থেকেই তাঁরা ভিওআইপি ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

এ নিয়ে টঙ্গীর মধুমিতা এলাকার অগ্রণী টাওয়ারে বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র‍্যাব। খবর পেয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, র‍্যাব বিভিন্ন সময় ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ে অভিযান চালিয়েছে। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে, টঙ্গীর মধুমিতা এলাকার অগ্রণী টাওয়ার থেকে ভিওআইপি ব্যবসা পরিচালনা করছে একটি চক্র। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে ভবনটির ১২ তলায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা তাজুল ও হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ৩২টি সিম বক্সে বিভিন্ন অপারেটরের সাড়ে ১১ হাজার সিম, ৩টি কম্পিউটার, ২টি ল্যাপটপ, ১টি মিনি পিসি, ৭টি মডেম, ১৫টি রাউটার ও ৫টি নেটওয়ার্ক হাব জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার দুজন ভিওআইপি ব্যবসার সক্রিয় সদস্য। তাঁরাসহ আরও কয়েকজন প্রায় ১২ বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছিলেন। তাঁরা ভিওআইপি সরঞ্জাম ব্যবহার করে অবৈধ টেলিযোগাযোগব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে প্রতিদিন বাংলাদেশে ১ লাখ ২৫ হাজার মিনিট আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেট করতেন। এসব কলের প্রতি মিনিটের খরচ ৮০ পয়সা। হুন্ডির মাধ্যমে এসব টাকা দেশে এনে তাঁরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতেন।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল-মঈন সাংবাদিকদের বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত, তা বের করার চেষ্টা করছে র‍্যাব।

এ সময় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, সরকার একটি নিয়মতান্ত্রিক টেলিযোগাযোগ পদ্ধতি চালু করতে চায়। এ খাতে যত অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলাকারী আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তাঁরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান। দেশের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য অবৈধ ভিওআইপি কল বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।

ইবাংলা/এসআরএস