শেরপুরের শ্রীবরদীতে এক বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে গারো পাহাড়ের মালাকোচা এলাকার জঙ্গলের ভেতরের এক টিলা থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ভোররাতে বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, গত ২০ দিন ধরে ভারত থেকে বন্য হাতির একটি দল খাদ্যের সন্ধানে শ্রীবরদীর উপজেলার মালাকোচা এলাকার লোকালয়ে নামে। এরপর থেকেই সীমান্তবর্তী ওই এলাকার বিভিন্ন টিলায় অবস্থান নেয় প্রায় ৫০টি হাতি। হাতির দল কৃষকের কাঁচা-পাঁকা ধান, শাক-সবজির বাগান খেয়ে সাবার করছে। নষ্ট করে গাছপালা। হামলা করছে বসতবাড়িতেও। তাই কৃষকেরা এসব রক্ষা করতে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে জেনারেটরের মাধ্যমে জিআই তারে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়। সন্ধ্যা হলেই সীমান্তের বেশিরভাগ এরিয়াতেই এই অবৈধ জিআই তারের সংযোগ দেয় স্থানীয়রা।
বালিজুরি রেঞ্জ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে হাতির দল সীমান্তে প্রবেশ করেছে। আমরা সব সময় পাহাড়া দিয়েছি, যাতে হাতির ও মানুষের কোনো ক্ষতি না হয়। আমার ধারণা, স্থানীয় কৃষকেরা জিআই তারে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়াতে হাতিটি মারা গেছে। হাতিটির বয়স অনুমান ২৫ থেকে ৩০ বছর হবে। দৈর্ঘ্য ১৫ ফুটের মতো। হাতিটি পুরুষ জাতের।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ভ্যাটেনারি সার্জন ডা. মেহেদী হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েই হাতিটি মারা গেছে। তবে হাতিটির নমুনা নেয়া হয়েছে। ল্যাবে পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কীভাবে মারা গেল। পরে মৃত হাতিটি সেখানেই গর্ত করে মাটি চাপা দেয়া হয়।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে হাতির দল সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছে। শুনতেছি কৃষকদের অবৈধ জিআই তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি আগেই নিশ্চিত হওয়া যাবে না, যখন পর্যন্ত রিপোর্ট না আসে।’
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, ‘কিন্তু কেউ যদি অবৈধভাবে জিআই তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ইবাংলা/এএমখান/নাঈম/০৯নভেম্বর, ২০২১