ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকাকে ডেঙ্গুর প্রকোপমুক্ত রাখার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। আগামী ২৭ এপ্রিলের পর ডিএনসিসি এলাকায় কারও বাসাবাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জেল-জরিমানা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় এক অনুষ্ঠানে মেয়র এসব কথা বলেন। এদিন ডিএনসিসির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সচেতনতা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মেয়র আতিক।
মেয়র আতিক বলেন, ‘আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে কোনো বাসায় বা অফিসে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জেল ও জরিমানা করা হবে। সরকারি অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সে অফিসের যিনি দায়িত্বে আছেন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, জরিমানা হবে। এমনকি আমার সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সেই অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার ক্লিয়ার মেসেজ।’
মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসির সকল ওয়ার্ডে মাসব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান শুরু করেছি। মানুষকে সচেতন করছি। লার্ভা পেলে মামলা হবে, জেল হবে, জরিমানা হবে এবং জরিমানার টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেড়ে যাবে। আমাদের আরও ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি আগেই ঘোষণা দিয়েছি ঈদের পর থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করব। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি রয়েছে। তারা সবসময় আমাদের পরামর্শ দেন সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আমাদের কীটতত্ত্ববিদরা বলেছেন এখন থেকেই মাঠে নামতে। তাই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’
‘সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা সচেতন হলে জেল-জরিমানা, মামলার দরকার নাই। তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন জায়গাগুলো পরিষ্কার করুন। এডিস মশা কামড় না দিলে ডেঙ্গু হবে না। সচেতন হয়ে নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকেও নিরপদ রাখুন।
মেয়র বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। যেসকল পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি করপোরেশন কিনে নিচ্ছে। ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যত্রতত্র না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জাম দিন নগদ টাকা গ্রহণ করুন। পুরোনো টায়ার, কমোড, রঙের কৌটা এগুলো ছাদে বা বারান্দায় না রেখে আমাদের কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিয়ে টাকা নিন।’
ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে রূপনগর এলাকার বাড়ি মালিক সমিতির সদস্যদের নিয়ে কাজ করছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা জরুরি৷ শুধু সিটি করপোরেশনের একার কাজ নয় এটি। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডিএনসিসির মাসব্যাপী এই প্রচারণা অভিযান সফল করবো।’
সচেতনতা কর্মসূচির মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বে-নজির আহমেদ, কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেনসহ এলাকাবাসী।