রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে বাসচাপায় ফুফু-ভাতিজা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে পূরবী সিনেমা হলের সামনের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারা হলেন মোছা. খায়রুন বেগম (৩৬) ও তার ভাতিজা মো. ইয়াসিন (৪)। পল্লবী থানার পুলিশ বুধবার (১ মে) এ তথ্য জানিয়েছে।
পল্লবী থানার অপারেশন অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা জানতে পারি পল্লবীর পূরবী সিনেমা হলের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় বসুমতি পরিবহন নামের একটি বাস তাদের দুজনকে চাপা দেয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, ঘাতক বাসের চালককে আটক করা হয়েছে, বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সদানন্দ বৈদ্য জানান, খায়রুন ও ঝরনা দুজনই পোশাকশ্রমিক। প্রতিদিনের মতো তারা গতকাল শিশু ইয়াসিনকে সঙ্গে নিয়ে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে তাদের কারখানা ছুটি হয়। তারা বাসায় ফিরছিলেন। ফেরার পথে ঝরনার কাছ থেকে ইয়াসিনকে নিয়ে কোলে নেন খায়রুন।
এসআই সদানন্দ বলেন, ঘটনার পর খায়রুন ও শিশু ইয়াসিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পল্লবীর স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
স্বজন মিজানুর রহমান বলেন, ইয়াসিনের মা-বাবার সঙ্গে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন খায়রুন। খায়রুন ও ঝরনা একই পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাঁদের কাজের সময় একই। পথচারী পারাপারের জেব্রা ক্রসিং দিয়েই গতকাল রাতে খায়রুন-ঝরনারা রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় বাসচাপার ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও জানান, খায়রুনের চার বছরের একটি ছেলে আছে। সে গ্রামের বাড়ি ভোলায় খায়রুনের মা-বাবার সঙ্গে থাকে। ভাতিজা ইয়াসিনকে খায়রুন সন্তানের মতো আদর করতেন। শিশু ইয়াসিনকে তার মা সঙ্গে নিয়ে পোশাক কারখানায় যেতেন। শিশুটিকে পোশাক কারখানার দিবাযত্নকেন্দ্র রাখা হতো।
মিজানুর রহমান বলেন, ইয়াসিনকে হারিয়ে তার মা পাগলপ্রায়। বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে খায়রুন ও ইয়াসিনের লাশ ভোলা সদর উপজেলার রতনপুর গ্রামে দাফন করা হবে বলে জানান মিজানুর রহমান।