অর্থ আত্মসাৎ ও চুরির দায়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা’কে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কলাবাগান থানায় দায়ের করা মামলায় জামিন আদেশ নামঞ্জুর করে শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এই মামলার আসামীদ্বয় বিজ্ঞ হাইকোর্টে জামিন নেয়ার পর গত ১৪মে ২০২৪ তারিখ আসামীদ্বয় বিজ্ঞ সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পন করলে বিজ্ঞ আদালত অন্তর্বর্তীকালিন জামিন দিয়ে ২০ মে শুনানীর দিন ধার্য করেন।
শুনানি শেষে বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন আদেশ খারিজ করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন এবং অন্য আসামী রেজাউল কবিরকে জামিনে মুক্তি দেন।
আরও পড়ুন…সাংবাদিক বেলাল হত্যার মূল পরিকল্পনা ও অর্থ যোগানদাতা শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা!
উল্লেখ্য শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা বিপিএল হাউজিং লিমিটেডের অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ অর্থআত্মসাৎ ক্ষমতার অপব্যবহার দুর্নীতি পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে।
কোম্পানির টাকা নিজ ব্যবসায় লগ্নিসহ গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ ও তাদের অসংখ্য অভিযোগের কারনে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। একই সাথে কোম্পানির দলিলপত্র প্রয়োজনীয় ফাইল, মোবাইল সেট ও হিসেব পত্র বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে এবং নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
শাহবুদ্দিন লস্কর ধীরা কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ এবং তছরুপকৃত অর্থ ফেরত না দিয়ে তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং সিআর ১১৫৮/২৩ (আদাবর) যা আদালত কর্তৃক খারিজ হয়ে যায়।
তার দায়িত্বকালিন সময়ের অনিয়ম ও অর্থআত্মসাৎ এর তদন্ত করার জন্য কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কোম্পানির নিরপেক্ষ ও বাহ্যিক (External) অডিটর কর্তৃক শাহবুদ্দিন লস্কর ওরফে ধীরার মেয়াদকালের (১/২/২০২২ থেকে ৩০/১২/২০২৩) অডিট কার্য সম্পন্ন করা হয়।
কোম্পানির অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও এক্রিডিয়েটেড অডিট ফার্মের অডিট রিপোর্টের মাধ্যমে ৪,২৪,১৩,১৫১ টাকা (চার কোটি চব্বিশ লক্ষ তেরো হাজার একশো একান্ন) অর্থ আত্মসাতের তথ্য উদ্ঘাটিত হয়। এছাড়াও নানা প্রতারনা ও হিসেবের গরমিল দেখিয়ে আরো বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। তার অর্থ আত্মসাৎ ও।
অনিয়মের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে যার নং ৮ তাং ১৩/৫/২০২৪ ধারা ৪০৮/৩৪ দঃবিঃ বর্তমানে এই মামলার প্রধান আসামী শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা সহ অন্যদের পলাতক দেখানো হয়েছে। শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা কোম্পানির নির্দেশ অমান্য করে ফাইল পত্র বুঝিয়ে না দিয়ে কোম্পানির ৬৮টি মূল দলিল চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে অফিস কাজে ব্যবহৃত।
(ক্রয়কৃত) ফ্ল্যাটের (জিয়ো শৈলী গার্ডেন ২য় তলা ১৪/৬ লেক সার্কাস কলাবাগান ঢাকা-১২০৫ ) ক্রয় চুক্তির মূল কপি, ফ্ল্যাটের টাকা পরিশোধের মানি রিসিপ্টের সকল মূল কপি সহ প্রয়োজনীয় ফাইল পত্র অফিস থেকে চুরি করে নিয়ে যায়।
এছাড়া ৪৮টি চেকের মাধ্যমে ১,৩২,৭৪,০০০ (এক কোটি বত্রিশ লক্ষ চুয়াত্তর হাজার) টাকা রিসিভ করে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে প্রতারনা করে চলছে। এই বিষয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা নং ৫ তাং ৭/৩/২০২৪ ধারা ৩৮১/৫০৬/৩৪ দঃবিঃ। বর্তমানে এই মামলার প্রধান আসামী হিসেবে শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা জেল হাজতে আছে। শাহাবুদ্দিন লস্কর ধীরা খুলনার সাংবাদিক বেলাল হত্যার চার্জশীটভুক্ত আসামী এবং খুলনার অসংখ্য হত্যা মামলার আসামী ও একজন আত্মস্বীকৃত খুনী।
বিভিন্ন দৈনিকে তার এই অপরাধের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। বায়োফার্মা কর্তৃপক্ষ তার সকল অপকর্ম ও অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় বরাবরে আবেদন করেছে যা তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়া ডিএমপির বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ১৪টির অধিক জিডি করা হয়েছে।