বাবার অসুস্থতার কারণে নারায়ণগঞ্জের পারিবারিক হার্ডওয়্যারের দোকানের হাল ধরেছিলেন র্যাপার আলী হাসান। তবে লোকসানের মুখে বহু বছরের স্মৃতিবিজড়িত সেই ব্যবসা আট মাস আগে গুটিয়ে নিতে হয়েছে তাকে।
ব্যবসা করতে গিয়ে নিজের জীবনের বাস্তবতা গানে গানে তুলে এনেছেন তিনি। হাসানের কথা ও সুরে ‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ শিরোনামে একটি গান করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন আলী হাসান। এরপরে গান তাকে নানাভাবেই পরিচিতি এনে দেয়। সম্প্রতি গানকে হারাম বলে আলোচনায় এসেছেন তিনি।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে আলী হাসান বলেন, গান-বাজনার টাকা হারাম। এত হাদিস চলবে না। যেটা হারাম, হারামই। আমার অটো বিজনেসের টাকা হালাল। সংগীত থেকে আয় হচ্ছে হারাম। এ জন্য ব্যবসার টাকায় (হালাল আয়) বাজার-সদায় করি, আর মিডিয়ার টাকায় (হারাম আয়) বিল্ডিং তৈরি করি। মিলাই-ঝিলাই করতেছি।
গান নিয়ে এমন বন্তব্যের পর নেটিজেনদের রোষানলে পড়েছেন আলী হাসান। এই ইস্যুতে আলী জানিয়েছেন, নিজের গানে ব্যবহার করবেন না বাদ্যযন্ত্র। গাইবেন ইসলামী গান।
গণমাধ্যমকে আলী হাসান বলেন, আমার বক্তব্য অনেকে বুঝতে পারেননি। আসলে আমি বলতে চেয়েছি, গানে যে বাদ্য-বাজনা ব্যবহার হয়, তা আমাদের ধর্মে হারাম। সেই কাজগুলো ছেড়ে দিতে চাই। পুরো ইন্টারভিউটা দেখলে আপনারা হয়তো আমার মনের কথাটা বুঝতে পারবেন।
ছোট একটি ক্লিপস দেখে কাউকে বিচার করবেন না। যদি আমার অসৎ উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে এ বিষয়ে কথা বলতাম না। আমি প্রায় এক ঘণ্টার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছি। এর মধ্যে অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। অনেক প্রশ্নের উত্তর মজা করে দিয়েছি।
আবার কিছু প্রশ্নের উত্তর ওভাবে গুছিয়ে বলতে পারিনি। আর যেটা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে সেটা মজার ছলে বলেছি।আলী হাসান জানান, বাদ্যযন্ত্র ছেড়ে দিলেও মিডিয়ায় থাকবেন তিনি। র্যাপ বা আধুনিক গান ছাড়লেও ভবিষ্যতে ইসলামী সংগীতের সঙ্গে যুক্ত থাকার ইচ্ছা আছে তার।
গান ছেড়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমার ধার্মিক মা-বাবা, স্ত্রী সবাই ধার্মিক। সবাই নামাজ-কালাম নিয়ে আছেন। আমার স্ত্রী মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। ছেলেকে মাদরাসায় ভর্তি করেছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গান-বাজনা ছেড়ে দেব।
এ প্রসঙ্গে র্যাপারের ভাষ্য, বর্তমানে গান ও অটো ব্যবসা দুটো মিলিয়েই চলছি। ধীরে ধীরে গান থেকে সরে আসব। বেশ কয়টি গানের কাজ হাতে আছে।
সেগুলো শেষ করে গান ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে। আমার শেষ গানের শিরোনাম হবে ‘ইসলাম’। এটি তৈরি করার পর আর গান লিখব না। প্রকাশের পর মানুষ হয়তো বুঝতে পারবে, কেন আমি গান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।