আলোচিত গায়িকা ইভা আরমানের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা হয়েছে। সম্পত্তি বিষয়ক মিথ্যাচারের অভিযোগে এই গায়িকার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেছেন ফকির আক্তারুজ্জামান। ঢাকার ৫ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ফকির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিআইপি ফকির আক্তারুজ্জামান।
এই মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, গুলশান ২–এর ৪৪ নম্বর রোডের ৬/বি, ব্লক সিডাব্লিউএন (বি), প্লটে ‘ইভা রোজ’ নামে একটি বহুতল আবাসিক ভবনে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য ডিজনী প্রপার্টিজ লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেন। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফকির গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির মাসরিকুজ্জামান ও পরিচালক ফকির মাসফিকুজ্জামান ফ্ল্যাট দুটি কেনার জন্য চুক্তি করেন। ফ্ল্যাট দুটি ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলায় অবস্থিত এবং প্রতিটি ফ্ল্যাট কমবেশি ৪৫০০ বর্গফুট গড় আয়তনের। চুক্তিতে দুটি করে কার পার্কিং এবং আড়াআড়ি জমিসহ ভোগ দখলের প্রয়োজনীয় অধিকারও উল্লেখ আছে।
শেখ উর্মী আরমান (ইভা) জমিটি তার সাবেক স্বামী মাহফুজুর রহমানের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। সেসময় তিনি ইভা রহমান নামে পরিচিত ছিলেন। এই জমিতে বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ইভা চুক্তি করেন ডেভলপার প্রতিষ্ঠান ডিজনী প্রপার্টিজ লিমিটেডের সঙ্গে এবং ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রার্ড পাওয়ার দেন। পরে ডেভেলপারের সঙ্গে ইভার বিবাদ শুরু হলে ইভা নিজে ভবনটি নির্মাণের দায়িত্ব নেন।
২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর ফকির মাসফিকুজ্জামান (ফাবি) ও ফকির মাসরিকুজ্জামানের সঙ্গে ফ্ল্যাট দুটি নিয়ে রেজিস্ট্রিকৃত বিক্রয় চুক্তি (চুক্তি নং ৮৫৩৬ ও ৮৫৩৭) হয়। আর সেই চুক্তি অনুযায়ী ইভা ওই ভবনের বাকি নির্মাণ কাজ শেষ করে ফ্ল্যাট দুটি ফকির মাসফিকুজ্জামান ও ফকির মাসরিকুজ্জামানকে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, ফ্ল্যাটের সব টাকা পরিশোধ করে দেন ফকির আক্তারুজ্জামানের দুই ছেলে।
ওই চুক্তিতে আরও উল্লেখ ছিল, ইভা নিজ দায়িত্বে ৬ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে ক্রেতাকে সাফ কওলা রেজিস্ট্রি করে দেবেন। কিন্তু চুক্তির শর্ত না মেনে অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই ফ্ল্যাট দুটির দখল দুই ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে ফকির গ্রুপের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার এডভোকেট জাফর শরীফ বলেন, রেজিস্ট্রি করা বিক্রয়চুক্তিপত্রের শর্তও মানতে রাজি হননি ইভা আরমান। শুধু তাই না ফ্ল্যাট দুটি তিনি বিক্রি করেননি বলেও মিথ্যাচার করছেন। এরপর ইভা ওই ফ্ল্যাট দুটি নিয়ে ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা (নং ২৪৫/২০২৩) করেন। সেসময় আদালত উভয়কে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন এবং বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে।
এদিকে ইভা ফ্ল্যাট দুটি নিয়ে শান্তি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ফকির আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা (নং ৮৩/২০২২) দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।