এবার মধ্যরাতে রাঙামাটি থেকে বিশেষ কায়দায় পাচারের সময় আনুমানিক দেড়কোটি টাকামূল্যের অবৈধ সিগারেট আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে রাঙামাটির মানিকছড়ি চেকপোষ্ট দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকভর্তি (চট্টমেট্টো-ড-১১-২৪-৩৩) জাম্বুরার গাড়ি চেক করার সময় ভেতরে ৩৩ বড়বস্তা ও ২টি ছোট বস্তাভর্তি অরিস সিলভার ও মন্ট সিগারেট পায় কর্তব্যরত যৌথবাহিনীর সদস্যরা।
বড় ট্রাক ভর্তি করে পাহাড়ের জাম্বুরা নিয়ে যাওয়ার ছদ্মবেশে ট্রাকে জাম্বুরার নীচে বস্তায় এসকল সিগারেট চট্টগ্রামে পাচার করার চেষ্ঠা করেছিলো চোরা কারবারি সিন্ডিকেট চক্র। এসময় ট্রাকের চালক রোমান ও হেলপার মঞ্জুরুল আলমকে হাতে নাতে আটক করেছে পুলিশ।
আটকের পরপরই রাঙামাটি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহাম্মেদ, কোতয়ালী থানার ওসিসহ নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্বর্তন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জব্দকৃত সিগারেটগুলোর মূল্য আনুমানিক প্রায় দেড়কোটি টাকা বলে সংশ্লিষ্টসূত্র তাৎক্ষনিকভাবে জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত রাঙামাটিতে এটাই সবচেয়ে বড় অবৈধ ভারতীয় সিগারেটের চালান আটক হয়েছে বলে জানাগেছে। এরআগে গতদুই মাসে একাধিক অভিযানের মধ্যদিয়ে রাঙামাটিতেই প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় সিগারেট আটক করেছিলো যৌথবাহিনীর সদস্যরা।
আটককৃত ট্রাক ড্রাইভার রোমান জানিয়েছে, উক্ত ট্রাকের মালিক জনৈক করিম কোম্পানীর। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানাধীন রানীরহাটে। মিলন চাকমা নামের এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে কুতুকছড়ি এলাকা থেকে এসকল সিগারেট ভেতরে রেখে চারিদিকে জাম্বুরা দিয়ে ডেকে মৌসুমী ফল নিয়ে যাওয়ার ছদ্মবেশে পৌনে দুই কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় সিগারেট পাচার করতে যাচ্ছিলো মিলন চাকমা।
মানিকছড়ি চেকপোষ্টের কর্তব্যরত যৌথবাহিনীর সদস্যরা এই জাম্বুরা গাড়িটি লোহার শিক মেরে চেক করার সময় তাদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে গাড়ি থেকে জাম্বুরা ফেলা শুরু করলে সিগারেটের বস্তাগুলো বের হয়ে আসে। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটির বরকল উপজেলা ও জুরাছড়ি উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকার অবৈধ ভারতীয় পণ্য এনে রাঙামাটি হয়ে চট্টগ্রামে পাচার করছে সিন্ডিকেট চক্র।
গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর হয়ে উঠলে, চোরাচালানি সিন্ডিকেট চক্র এখন নানান ছদ্মবেশে মৌসুমী ফলের গাড়ি, কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি, সিএনজি অটোরিক্সা, মোটর সাইকেলে করে বিভিন্ন কোম্পানীর ডিলারের মালামালের ছদ্মাবরনে ভারতীয় সিগারেট পাচার করে আসছে।
এদিকে এই সিগারেট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে ব্যাপকহারে বেড়েছে চাঁদাবাজি। বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতাকর্মীরা গাড়ি প্রতি কয়েক লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে সাপোর্ট দিয়ে এসকল অবৈধ পাচারকারিদের নিরাপদে অবৈধ ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ইবাংলা/ আইএইচ