যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে মূলত প্রাধান্য পায় অর্থনীতি ও বোকারা’—দেশটিতে ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিল ক্লিনটনের প্রচার কৌশলবিদ জেমস কারভিলের এমন উক্তি করেন। এবারের নির্বাচনেও তাই অন্যান্য বিষয়ের আগে অর্থনীতিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন ভোটাররা। তবে তার সঙ্গে তারা প্রাধান্য দিয়েছেন আরও বেশ কয়েকটি বিষয়কে।
যেগুলো ট্রাম্প কার্ড হয়েই ভূমিকা রেখেছে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের হারের জন্য।
এডিসন রিসার্চের জাতীয় বুথফেরত জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, অর্থনীতি ইস্যুকে শীর্ষে রেখেছে ৩১ শতাংশ ভোটার। আর ৩৫ শতাংশ ভোটার গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আর যেসব ভোটারের কাছে অর্থনীতিই প্রধান উদ্বেগের বিষয় তাদের ৭৯ শতাংশ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ও ট্যাক্স হ্রাসের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি ট্রাম্পকে জেতাতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
অর্থনীতি ছাড়াও রক্ষণশীল মার্কিনিদের ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গর্ভপাত নিষিদ্ধকরণ, ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতার বিরুদ্ধে তার অবস্থান। যা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর গ্রামীণ এলাকা ও শহরতলির ভোটারদের ট্রাম্পকে ভোট দিতে উৎসাহী করেছে।
এসবের পাশাপাশি অভিবাসন ও অভিবাসী সংকট সমাধানে কমলা হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্পের ওপরই আস্থা বেশির ভাগ আমেরিকানের। বাইডেনের আমলে মূল্যস্ফীতির মতো অবৈধ অভিবাসনও রেকর্ড হারে বাড়ে। ফলে অনেক আমেরিকানই মনে করেন, ডেমোক্র্যাটরা অভিবাসন নীতি সহজ করে দেশে অশ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যা বাড়াতে পারে। অন্যদিকে ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীকে নির্বাসনে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এবার নির্বাচনের আগে কঠোর অভিবাসন নীতি প্রয়োগেরও কথা বলেছেন।
অভ্যন্তরীণ এসব বিষয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেন ও ইসরায়েলকে শত শতকোটি ডলারের অর্থসহায়তা ও অস্ত্র দিচ্ছে, এ নিয়ে অনেক আমেরিকান ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, বাইডেনের শাসনামলে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল হয়ে গেছে। যেখানে কমলার ডেমোক্র্যাট বিদেশি যুদ্ধে বিপুল টাকা ঢালছে, সেখানে ট্রাম্প নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে যত দ্রুত সম্ভব—সব যুদ্ধ বন্ধ করে বিশ্বে শান্তি ফেরাবেন।