পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির পথসভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া এক দল যুবকের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়া, মাইক কেড়ে নেওয়া ও চেয়ার ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা শহরের তেঁতুলতলা এলাকায় শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতন্ত্র জাগরণ যাত্রা শীর্ষক পথসভায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসানাত আব্দুল্লাহকে অভিযোগ দিয়েছেন সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স।
এদিকে ঘটনার পরে পথসভা শেষ করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান সিপিবির নেতারা। পরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন তেঁতুলিয়া পঞ্চগড়ের তেঁতুলতলায় পথসভায় বক্তব্য শেষ করতে পারলাম না। পথসভা শেষ করতে দেওয়া হলো না। ওরা কারা? প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নেই। সারাদিনের অন্যান্য কর্মসূচি চলবে। ধৈর্যেরও সীমা আছে। মুহূর্তেই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে নেটিজেনদের নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এমন সময় কয়েকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বলেন, আমরা নাকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম। এতদিন কই ছিলাম। পরে তারা প্রিন্স ভাইয়ের হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেয়। ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দেয়, চেয়ার ভাঙচুর করেন। আমরা তাদের বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তারা কোনো কথাই শোনেননি। পরে পুলিশকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ছেলেগুলো আমাদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করে দিয়েছে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, কয়েকজন ছেলে আমাদের পথসভায় সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আমার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা আমাদের লোকজনকে শাসিয়ে বলতে শুরু করেন আপনারা এখানে কী করছেন। তখন আমি তাদের বলি আমার সঙ্গে কথা বল। তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে ব্যানার কেড়ে নেয়। তবে পুলিশের কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। ওসি উপস্থিত থাকলেও তার ভূমিকা রহস্যজনক মনে হয়েছে। পরে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে আসি। আমরা এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।
তবে ব্যানার কেড়ে নেওয়া ও বাধা দেওয়ার বিষয়ে হয়রত আলী বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতে মানুষ নির্যাতিত। তাদের কিছু দোসরদের নিয়ে তারা পথসভা করছিলেন। স্থানীয়রা আওয়ামী লীগের লোকজন দেখে তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ায়। পরে আমি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি, সমাধান করি। আমি কারো ব্যানার ছিনিয়ে নেইনি, পথসভায় বাধাও দেইনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তেঁতুলিয়ায় লিড দিয়েছিলাম। তবে এখানে আমাদের কোনো কমিটি নেই।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি এনায়েত কবির বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। পথসভা শেষের দিকে কয়েকজন ব্যক্তি সিপিবি নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, বিগত দিনে তোমরা আওয়ামী লীগের দোসর ছিলে, দালালি করেছ, আন্দোলনের সময় ছিলে না, এতদিন পরে কোথা থেকে বের হয়েছ। পরে এ নিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে তারা সবাই চলে গেছে। কে বাধা দিয়েছে তাদের পরিচয় কেউ বলতে পারছে না। এ নিয়ে সিপিবির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।