লোভ দেখিয়ে শাহবাগে জনসমাগম করার নেপথ্যে

বিনা সুদে, বিনা জামানতে এক লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রাজধানীর শাহবাগে জনসমাগমের চেষ্টা করেছে একটি সংগঠন।

রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত থেকে শাহবাগে সমাবেশের জন্য শত শত লোক ঢাবি ক্যাম্পাসে আসতে থাকে।এ সময় তারা তাদের যানবাহন ক্যাম্পাসে রেখে অবস্থান করতে থাকে। পরে সকালে ক্যাম্পাস থেকে তাদের সরিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, মোবাইল টিম, শিক্ষার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

এ সময় তাদের কাছে কিছু প্রচারপত্র পাওয়া যায়। ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামক এক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক আ.ব.ম. মোস্তাফা আমীনের ছবিসংবলিত ওই প্রচারপত্রে লেখা-লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার করব, বিনা সুদে পুঁজি নেব। আরও লেখা ছিল- কৃষক, শ্রমিক, হকার, বেকার তথা সকল জনগণ থেকে ভ্যাট, ট্যাক্স হিসাবে আদায় করা লক্ষ-কোটি টাকা ক্ষমতাশ্রিত একটি হায়েনার দল, স্বাধীনতার পর থেকেই লুটপাট করছে।

‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ শিরোনমে দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইন প্রণয়নের দাবিতে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে আরও লেখা- বিনা সুদে, বিন জামানতে এক লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পুঁজি পেয়ে দারিদ্র্য মুক্তিতে আগ্রহী সর্বস্তরের জনগণকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

কার্যালয়ে পুঁজির আবেদনের ‘ছক’ পাওয়া যায়। নির্ধারিত ছকে পুঁজির আবেদন করুন। এর বাইরে তাদের কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও থানার কিছু ক্লিয়ারেন্স, টাকার জন্য আবেদনকারীদের তালিকাসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজ জব্দ করা হয়। তবে সেগুলো নকল দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি চক্র অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাদের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনেছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রান্তিক এলাকাগুলোর বিভিন্ন শ্রেণির লোকদেরকে এক লাখ করে টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শাহবাগের এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানায় অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামক এই প্ল্যাটফর্ম। ক্যাম্পাসে আসা এসব বহিরাগতদের বিতাড়িত করে ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ রহমান বলেন, আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যেই টিএসসি বহিরাগতমুক্ত করেছি এবং বাসসহ যানবাহনগুলো প্যাকেট করে পাঠিয়ে দিয়েছি। আর আপাতত কয়েকজন হোতাকে আটক করেছে পুলিশ।

ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান সাকিব বলেন, শাহবাগে সমাবেশের কথা বলে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে। সে অনুযায়ী আজ রাত থেকেই বাস, ট্রাকে করে লোকজন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আসতে থাকে। সকালের দিকে যানবাহন ও লোকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়, পরে শিক্ষার্থীরা গিয়ে সেগুলো বিতাড়িত করে।

আমার মনে হয়, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। দেশকে অস্থিতিশীল করতেই এমনটা করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ক্যাম্পাসে আগত বহিরাগত ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাত থেকেই প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম কাজ করছে। ভোর রাত থেকেই আমাদের সহকারী প্রক্টররা কাজ করছিলেন। সকালে আমি পুলিশের আইজিকেও জানিয়েছি। তাদেরও বড় একটা টিম ক্যাম্পাসে কাজ করছে। সকলের সহযোগিতায় প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম বহিরাগতদের বিতাড়িত করেছে।
ই- বাংলা:এম-আর-আর