ব্যান্ডউইথ ট্রানজিটে বাংলাদেশের লাভ নেইঃ ভারতের প্রস্তাব নাকচ

কোলকাতা প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশে তখন ক্ষমতায় আওয়ামী লিগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদেশের দুই ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল সামিট কমিউনিকেশন্স ও ফাইবার অ্যাট হোমের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যান্ডউইথ পরিকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ভারতের টেলিকম সংস্থা এয়ারটেল। বস্তুত, সেই প্রক্রিয়া এগিয়েও গিয়েছিল অনেকটাই।

অনুমোদনের প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। পড়শি দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন না হলে হয়তো অনুমোদন মিলেও যেত। বদলের বাংলাদেশে এবার ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে ব্যান্ডউইথ ট্রানজিটের প্রস্তাব নাকচ করে দিল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা বিটিআরসি। সূত্রের খবর তেমনই।

ঘটনাটি ঠিক কী? বাংলাদেশে তখন ক্ষমতায় আওয়ামী লিগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদেশের দুই ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল সামিট কমিউনিকেশন্স ও ফাইবার অ্যাট হোমের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যান্ডউইথ পরিকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ভারতের টেলিকম সংস্থা এয়ারটেল। বস্তুত, সেই প্রক্রিয়া এগিয়েও গিয়েছিল অনেকটাই।

বাংলাদেশের উপর দিয়ে ব্যান্ডউইথ ট্রান্সজিটের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল এয়ারটেল। এরপর নিয়মাফিক সেই প্রস্তাব পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল টেলিযোগাযোগ বিভাগে। কিন্ত শেষ ধাপে ব্যান্ডউইথ ট্রানজিটের প্রস্তাব নাকচ করে দিল বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

পরিকল্পনা ছিল, বাংলাদেশের আখাউড়া সীমান্তে টেরেস্ট্রিয়াল কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন (টিসিএলএস) তৈরি করবে সামিট ও ফাইবার অ্যাট হোম। সেই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনটিকে ফাইবারের মাধ্যমে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। ফলে পরিষেবা পৌঁছে যাবে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত।

এদিকে বাংলাদেশে সীমান্তে টেরেস্ট্রিয়াল কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বে ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা দেবে এয়ারটেল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ব্যান্ডউইথ নিয়ে এই ট্রানজিটে বাংলাদেশের তেমন কোনও লাভ নেই’। তাঁর দাবি, ‘শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বাংলাদেশের সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোমের কিছু ব্যবসা হত। ভারতেরও লাভ হত।

এখন ভারতের সেভেন সিস্টার্স থেকে চেন্নাই সাবমেরিন কেবলের ল্যান্ডিং স্টেশনের দূরত্ব ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার, এখান থেকে সিঙ্গাপুরের দূরত্ব আরও ৮ হাজার ৭০০ কিলোমিটার। এছাড়া দুর্গম পর্বতের কারণে ভারতের ভেতর দিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ফাইবার নেটওয়ার্ক পৌঁছানো ও রক্ষণাবেক্ষণ মুশকিল ও ব্যয়বহুল। দূরত্বের কারণে ল্যাটেন্সি (ইন্টারনেট গতি) হয় ৫৫ মিলিসেকেন্ড, যা সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ৮৭ মিলিসেকেন্ড। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট পেলে নেটওয়ার্কের দূরত্ব কমে যাবে ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার এবং সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ল্যাটেন্সি কমে যাবে ৩৭ মিলিসেকেন্ড’।

সুত্রঃ সংকলনে এম আর আর