করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁয় চলছে বিশেষ বিধিনিষেধ। এর মধ্যেই নওগাঁয় বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। গতকাল শনিবার (১৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে রোববার (২০ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ২৩০ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত ১৬ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬১ জনের মৃত্যু হলো। গত ২৪ নতুন শনাক্ত ২৩০ জনের করোনা পজিটিভ এসেভে ৭২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায়। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তি জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বাসিন্দা।
শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬২। চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেও জেলায় চলতি মাসে একের পর এক রেকর্ড সংখ্যক রোগী শনাক্ত হওয়ায় চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ।
এর আগের ২৪ ঘন্টায় ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার ১৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
শনাক্তের হার ছিল ১৯ শতাংশ। বুধবার ৫৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এক দিনে সর্বোচ্চ ১২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৮২ শতাংশ।
নওগাঁর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ৫২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৭ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ জেলার ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ২০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জনের ফলাফল করোনা পজিটিভ এসেছে। নতুন শনাক্ত লোকজনের মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭৯ জন।
এ ছাড়া রানীনগর উপজেলায় ১০, আত্রাইয়ে ৭, মহাদেবপুরে ২১, মান্দায় ২২, বদলগাছিতে ১৯, পত্নীতলায় ১৭, ধামইরহাটে ১০, নিয়ামতপুরে ২০, সাপাহারে ১৫ এবং পোরশা উপজেলার ১০ জন শনাক্ত হয়েছেন।
নওগাঁয় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ২৩ এপ্রিল। সেই থেকে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬২। জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬১ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ।
করোনার সংক্রমণ রোধে চলতি মাসের ৩ জুন থেকে নওগাঁ জেলার কয়েকটি উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউন শেষে পরে পুরো জেলায় বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের জারি করা বিধিনিষেধ এখনও চলছে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পার্সন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, লকডাউন ও বিধিনিষেধের মধ্যেই জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়।
মানুষের অসেচতনতার কারণেই করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছে। সবাই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।
ই বাংলা/ আই/ ২০ জুন, ২০২১