আজ বৃহস্পতিবার রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশ দুটি হলো মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫।
এই দুটি অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। এর ফলে এই অধ্যাদেশের পরিবর্তনগুলো সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়ে গেছে।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির এনবিআরের প্রস্তাব পাস করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ না থাকায়।
অধ্যাদেশের মাধ্যমে শুল্ক-কর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যেখানে খরচ বাড়বে
এত দিন মুঠোফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ হতো। এটি বাড়িয়ে এখন ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও বাড়বে।
ব্র্যান্ডের দোকান ও বিপণিবিতানের তৈরি পোশাকের আউটলেটের বিলের ওপর ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সব ধরনের রেস্তোরাঁর ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
শুল্ক-কর বৃদ্ধির তালিকায় আরও আছে টিস্যু, সিগারেট, বাদাম, আম, কমলালেবু, আঙুর, আপেল ও নাশপাতি, ফলের রস, যেকোনো ধরনের তাজা ফল, রং, ডিটারজেন্ট, রং, মদের বিল, পটেটো ফ্ল্যাকস, চশমার প্লাস্টিক ও মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, সানগ্লাস, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও তাতে ব্যবহৃত তেল, বিদ্যুতের খুঁটি, সিআর কয়েল, জিআই তার ইত্যাদি। এ ছাড়া ভ্রমণ করও বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যকে বলেন, এ ধরনের কর এমন এক সময়ে বাড়ানো হলো যখন দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে শুধু নিম্ন আয় ও প্রান্তিক আয়ের মানুষ নয়; মধ্যবিত্তরাও হিমশিম খাচ্ছেন। এখন নতুন শুল্ক-কর আরোপের ফলে এই শ্রেণির মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে।