আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যতদিন প্রয়োজন হয় ততদিন ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে এমনটা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ডেভিল হান্টের মাধ্যমে যারা দেশকে আনস্টেবল (অস্থিতিশীল) করার চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনিভাবে ধরার চেষ্টা চলছে।
‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশনে যৌথভাবে সকলে ফোকাসড ওয়েতে কাজ করছে। দেশের স্টেবল অবস্থাকে আনস্টেবল করার চেষ্টা হচ্ছে, সেটি নিউট্রাল করার চেষ্টা চলছে ‘ডেভিল হান্টের’ মাধ্যমে। এর জন্য আইনি পন্থায় যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার, তা নেয়া হবে। এজন্য সব বাহিনীকে প্রস্তুত ও ব্রিফিং করা হয়েছে।
‘অপারেশন ডেভিল হান্টের’ নেতৃত্ব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি পুলিশি কাজ। সেনাবাহিনী সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের যে ক্ষমতা আছে, ডেভিল হান্টে যৌথবাহিনীর সে ক্ষমতা। যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন ডেভিল হান্ট চলবে।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, দেশে যে পরিবর্তন এসেছে, আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণেই সারাদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়। পুলিশ বাহিনীর মোরাল (নৈতিকতা) ক্ষয়ক্ষতি, মানসিক দুর্বলতা, থানা পুড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে কারণে সারাদেশে সেনা মোতায়েন আছে।
নাসিমুল গনি বলেন, আগে যেভাবে আইন প্রয়োগ করা হতো, সে পথে হাঁটতে পারবো না। আইনের স্পিরিট নিয়ে কাজ করতে হবে। কীভাবে সুষ্ঠুভাবে আইন প্রয়োগ করা যায় সেটি নিয়ে আইন প্রয়োগের সঙ্গে যারা জড়িত সব মহলের (যেমন-পুলিশ, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, প্রসিকিউটর) সবার সঙ্গে বসা হবে।
বিশেষ অগ্রাধিকার পাবে মানবাধিকার ও পরিবেশ। মানবাধিকারের জন্যই এই আন্দোলন হয়েছে। সন্তানদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ রেখে যেতে চাই। ‘আয়নাঘর’ যেন আর তৈরি না হয়। যারা কাজ করবেন তারা যেন উপযুক্তভাবে করতে পারেন।
আগামী মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে আইন প্রয়োগকারী ও বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে বসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ১৫০ জনকে নিয়ে বসবো।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা, শিল্প উপদেষ্টা, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইজিপিসহ আরও অনেকে থাকবেন এই কর্মশালায়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ে এই কর্মশালা হবে। প্রথমে ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটনে হবে। পরে সব জায়গায় ফিজিক্যালি এই কর্মশালা করতে চাই।
পুলিশ বাহিনীকে নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে, সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখেনি। আমাদের সরকার অতটা অমানবিক হতে পারেনি। মনোবল ভেঙে গেছে একটি বাহিনীর। সেই বাহিনীকে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেনজীর (সাবেক পুলিশ প্রধান) কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সেটা অবশ্যই সরকার দেখছে। পুলিশ যেন কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য খুব অ্যাক্টিভলি কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।
যারা বাইরে থেকে এখন কাউন্সিল করছে, তারা দেশে থেকে যে কাজ করাতে পারেনি এবং ফেইল করেছে এখন কি খুব এফেক্টিভ (ফলপ্রসূ) কিছু করাতে পারবে? যেসব আসামি জামিনে বের হয়েছে, তারা যদি ওইরকম কিছু করে, তাহলে অবশ্যই ধরা হবে।