২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৯ সালের এই দিনে, বাংলাদেশের পিলখানা (বাংলাদেশ রাইফেলস – বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) সদর দপ্তরে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এতে ৭৪ জন সেনা কর্মকর্তা, তাদের পরিবারসহ অনেকেই নিহত হন, এবং এটি ছিল দেশের ইতিহাসে অন্যতম শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনা।
আরও পড়ুন…দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টানা ৪০ দিনের ছুটিতে
এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি বড় অংশের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, এবং অনেকের মনে অশান্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সরকার এবং আদালতগুলো এই হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত শুরু করে, এবং অনেকেই দোষী সাব্যস্ত হয়।
পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৬ বছর পূর্তির দিনে, শোকের পাশাপাশি, যারা এই ঘটনার শিকার হয়েছেন তাদের স্মরণ করা হচ্ছে এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করা হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনে ২৫ ফ্রেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবসও ঘোষণা করেছে সরকার। এসব পদক্ষেপকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অনুষঙ্গ হিসেবে দেখতে চান শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরা।
শহীদ কর্নেল মজিবুল হকের স্ত্রী নেহরীন ফেরদৌসী জানান, অনেক প্রশ্ন ছিলো। সেগুলোর উত্তর এখনও জানা হয়নি। পরবর্তীতে আমরা বুঝতে পেরেছি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দেশে বিদেশে যাদেরই পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যত দিন যাবে এই মামলার প্রমাণগুলো হারিয়ে যেতে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শহীদ লে.কর্নেল রুবি রহমানের ছেলে ডা. কাজী অদ্রি জানান, আমরা ভারতের সংশ্লিষ্টতার কথা আলোচনা করি। তবে তার মানে এই নয় যে ভেতরে যেসব জাওয়ানরা ছিলো তারা নির্দোষ। আমরা সবসময়ই বুঝতে পেরেছিলাম যে বিগত সরকারের সরাসরি সম্পৃক্ততার জন্য এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়া যাচ্ছিল না।
পিলখানার নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর হাইকোর্টের রায়েও মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে ১৩৯ জনের। যাবজ্জীবন ১৮৫ জনের আর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে ২২৮ জনের। হাইকোর্টের রায়ের পর প্রায় আট বছরে মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।
অন্যদিকে, বিস্ফোরক আইনের মামলাটি প্রায় এক যুগ ধরে ঝুলে আছে। সম্প্রতি মুক্তিও পেয়েছেন ১৭৮ জন। তবে এই বিলম্বের জন্য বিগত সময়ের প্রসিকিউশনকে দায়ী করেছেন মামলার নতুন চিফ প্রসিকিউটর বোরহান উদ্দিন।
হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরও বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিন আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনো কিছু মহল বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে বলে মনে করেননতুন প্রসিকিউশন টিম।
ইবাংলা/ বাএ