তুরস্ক এবং কুর্দিদের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) মধ্যে চলা ৪০ বছরের যুদ্ধ শেষ হতে চলেছে। পিকেকের কারাবন্দী নেতা আবদুল্লা ওচালান অস্ত্র নামিয়ে রাখার আহ্বান জানানোর পর এই যুদ্ধের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
শনিবার (১ মার্চ) দেয়া এক বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তারা আশা করছে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ওচালানকে মুক্তি দেয়া হবে। তিনি মুক্তি পেয়ে এই নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া নেতৃত্ব দেবেন। ১৯৯৯ সাল থেকে এই নেতা কারাবন্দী রয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার যে আহ্বান আমাদের নেতা জানিয়েছেন, তার প্রতি সম্মান রেখে আজ থেকে আমরা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছি। আমাদের কোনো সেনা আক্রান্ত না হলে সশস্ত্র কোনো পদক্ষেপ নেবে না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে তুরস্কের কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির এমপিরা ওকালানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে যান। সেখান থেকেই পিকেকে সংগঠনটিকে চিরতরে বিলুপ্ত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা (দলের) সম্মেলন করুন এবং সিদ্ধান্ত নিন। সংগঠনের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। পিকেকেকে অবশ্যই নিজেদের বিলুপ্ত করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। এই লড়ইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং কুর্দিদের জন্য বৃহত্তর অধিকারের দাবি জানাতে থাকে। পিকেকের সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীগুলো তুরস্কে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায়।
তারা সাধারণত গাড়ি বোমা ও অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে তুরস্কের সেনা ও সামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা করে থাকে। তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইরাকেও এই গোষ্ঠীর সদস্যদের অবস্থান রয়েছে। তুরস্ক ও এর মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো পিকেকেকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।