কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতির চেষ্টাকালে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় ২ মামলা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা সময় স্থানীয় লোকজনের গনপিটুনির ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে পালং মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা দুটি করেছেন।

আরও পড়ুন…মাদরাসায় যাওয়ার পথে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা

মামলায় আসামি হিসেবে ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে আহত ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গন পিটুনির ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজন মধ্যে একজন গত শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে ও অপরজন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এবং তৃতীয়জন গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। আহত পাঁচজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে গনপিটুনির ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে পাঁচ জন আহত হয়েছেন। নিহত একজনের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। তাঁর নাম এবাদুল ব্যাপারী, তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানরগাঁও এলাকায়।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে বালু পরিবহনের নৌযান বাল্কহেডে হানা দেয় ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল। তখন ওই এলাকার নৌযানের শ্রমিকেরা ও স্থানীয় জনতা তাঁদের ধাওয়া করেন।

ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি ও ককটেল ছুড়ে স্পিডবোট ও ট্রালার যোগে কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালাতে থাকেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের আংগারিয়া ইউনিয়নের দাদপুর নতুন হাট এলাকা থেকে ডোমসার তেতোলিয়া পর্যন্ত কীর্তিনাশা নদীর দুই তীরে ও নদীতে নেমে স্থানীয় লোকজন তাঁদের ধাওয়া করতে থাকেন। তখন ডাকাত দলের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেন।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক খন্দকার রাশেদ বলেন, রাতে যে চারজনকে ঢাকা মেডিকেল থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তাঁদের ঢাকা মেডিকেলের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাকাতি করে পালানোর সময় গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত দুটি মামলা করা হয়েছে। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ওই বিষয়ে হত্যা মামলাও করা হবে; সেই প্রস্তুতিও চলছে। নিহত দুজনের মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। আরেকজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে আছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে ওই মরদেহগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইবাংলা বাএ