ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় আনন্দ-উৎসবে ঈদুল ফিতর পালিত

ইস্রাফিল হাওলাদার

সমগ্র দেশজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, যেখানে ছোট-বড় সবাই ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে। ঈদুল ফিতর মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব, যা এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় এই দিনটি অত্যন্ত শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করে।

আরও পড়ুন…ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সারাদেশে আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। এক মাস সিয়াম সাধনার পর সোমবার ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ঈদের নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছেন।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশবাসীর মঙ্গল ও শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ শেষে মুসলিমরা পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ঈদ আনন্দে সবাইকে শরিক করতে আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্রদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন অনেকে। সরকার ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বিশেষ আয়োজনও ছিলো এই উৎসবকে কেন্দ্র করে।

এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেস্টা দেশবাসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান। ঈদের ছুটিতে মানুষ শহর থেকে গ্রামে ছুটেছে আপনজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।

ঈদের দিন ভোর থেকেই মুসলমানরা নতুন পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে ঈদগাহ বা মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। ঈদের নামাজ আদায়ের পর একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়।

ঈদের প্রধান আকর্ষণ ঈদের নামাজ, যা সাধারণত উন্মুক্ত মাঠ বা বড় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দোয়া করা হয় জাতীয় শান্তি, সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণের জন্য।

ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের বাড়িতে যাওয়া, তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আপ্যায়ন করা হয়। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই যেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, সে জন্য যাকাত ও ফিতরা প্রদান করা হয়। শহর ও গ্রামে বিভিন্ন ধরনের মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিনোদনমূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য সুস্বাদু খাবার-দাবার। বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরে বিশেষত সেমাই, পায়েস, জর্দা, বিরিয়ানি, কোরমা, রোস্ট, নান রুটি ইত্যাদি পরিবেশন করা হয়।

ঈদকে কেন্দ্র করে সরকার দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা বিতরণ করে। নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ তৎপর থাকে। ঈদ উপলক্ষে গণপরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়, যাতে মানুষ নিরাপদে গ্রামের বাড়ি ফিরতে পারে। টেলিভিশন ও রেডিওতে ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হয়।

শহরে ঈদের সকালে রাস্তাঘাট ফাঁকা হলেও, বিনোদনকেন্দ্র ও পার্কগুলোতে মানুষ ভিড় জমায়। গ্রামে ঈদের উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়, যেখানে আত্মীয়-স্বজন একসঙ্গে মিলিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করেন।

ঈদুল ফিতর শুধু আনন্দের উৎসব নয়, এটি সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার প্রতীক। ধনী-গরিব সবাই মিলে এই দিনটি উদযাপন করে, যাতে সবার মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।

ইবাংলা/ বাএ

ঈদুল ফিতর