ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে চীনের ভূমিকা কত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকির মধ্যে প্রতিদিনই সীমান্তে গোলাগুলি হচ্ছে। যেকোনো সময় সামরিক সংঘাতে জড়াতে পারে দুই দেশ। শেষ পর্যন্ত যদি যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় তাহলে চীনের ভূমিকা কী হতে পারে তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি জানান, কাশ্মীরে হামলার পরে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার দিকে নজর রাখছেন তারা। দুই পক্ষই সংযত থাকে সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন এমন একজন কায়েদ-এ-আজম ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহম্মদ শোয়েব।

তিনি বিবিসিকে জানান, পাকিস্তানের নীতি নির্ধারকরা ভালো করেই জানে চীন এসে পেছনে থেকে যুদ্ধ করবে না বা সরাসরি যুদ্ধে সামিলও হবে না। যদি পরিস্থিতি এক বছর আগের মতো থাকত তাহলে হয়ত চীন ভারতের সঙ্গে সীমান্তে কিছু না কিছু করত যাতে ভারতের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে তাদের দুটো সীমান্তে যুদ্ধ করতে হবে।

অধ্যাপক মুহম্মদ শোয়েব বলেন, আমরা উন্নত দেশ নই, তাই বিশেষত কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য আমাদের চীনের ওপরে নির্ভর করতে হয়, যার মধ্যে আবার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্য আদান-প্রদান। যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, তাহলে এই সব ব্যাপারে চীন ধোঁকা দেয় না।

তিনি আরও বলেন, চীনের একটা বাধ্যবাধকতা হলো তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক-যুদ্ধে ফেঁসে আছে, তাই তারা ভারতের সঙ্গে নতুন কোনো ফ্রন্ট খুলতে চাইবে না। চীনের বাণিজ্যের একটা বড় অংশীদার ভারত, তাই ভারতের সঙ্গে চীন সবসময়েই মজবুত সম্পর্ক রাখতে চায়।

শোয়েব বলেন, চীন কখনও খোলাখুলি তাদের বক্তব্য প্রকাশ করবে না, তারা সবসময়ের মতোই আকার-ইঙ্গিতে নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দেবে, যেরকম বক্তব্য তারা এই সংকটের সময়েও দিয়েছে।

আরও পড়ুন…যুদ্ধ কি আসন্ন? ২ মাসের খাবার মজুদের নির্দেশ

প্রতিরক্ষা নিয়ে পাকিস্তানের যথার্থ দুশ্চিন্তার ব্যাপারে চীন অবহিত আছে। সার্বভৌমত্ব ও প্রতিরক্ষার স্বার্থে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে চীন সমর্থন করে বলেও জানায়।

এদিকে, সম্প্রতি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে নিযুক্ত চীনা কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন বলেছেন, সব পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশে থাকবে বেইজিং। যদিও তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। পাকিস্তান ও ভারতের উচিত সংলাপ ও কূটনৈতিক পথে শান্তির রাস্তা খোঁজা।

তিনি আরও বলেন, চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা অবকাঠামোতে দীর্ঘদিনের। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল, আছে, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে—বিশেষ করে নিরাপত্তা, কৌশলগত সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে।

বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরা হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় হামলা করলে বিশ্ব নেতাদের সমর্থন পাবে না দিল্লি। তবে, হামলায় পাকিস্তান জড়িত থাকার প্রমাণ যদি ভারত দেখাতে পারে তাহলে চীনকেও ইসলামাবাদকে সাহায্য ও সমর্থন করার বিষয়টি ভাবতে হবে।

ইবাংলা বাএ

চীনেরবাঁধলেভূমিকাযুদ্ধ