ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর, রোববার (১১ মে) অমৃতসরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। শহরের বিভিন্ন স্থানে জনসাধারণকে স্বাভাবিক কার্যকলাপে অংশ নিতে দেখা গেছে। এক রেস্তোরাঁয় ক্রেতাদের ভিড় প্রমাণ করে, সীমান্তের উত্তেজনার মধ্যেও জনজীবনে স্বস্তি ফিরছে। তবে এখনো উভয় সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত।
চার দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর ঘোষিত যুদ্ধবিরতির ২৪ ঘণ্টার মাথায় ভারতীয় সেনাবাহিনী রোববার (১১ মে) পাকিস্তানকে একটি জরুরি “হটলাইন বার্তা” পাঠিয়েছে। এতে তারা জানিয়েছে, সম্প্রতি স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলে ভারত উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে।
আরও পড়ুন…প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে
ভারতের সামরিক অভিযান পরিচালনা বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “এ ধরনের সমঝোতা বাস্তবায়িত হতে কিছুটা সময় লাগে। তবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং কোনো ধরণের লঙ্ঘন হলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও জানান, শনিবার বিকেলে তার পাকিস্তানি সমকক্ষ তাকে ফোন করে “শত্রুতা বন্ধ” করার প্রস্তাব দেন এবং যুদ্ধবিরতির জন্য জরুরি অনুরোধ জানান।
যুদ্ধবিরতির ফলে রোববার সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে ভারতীয় কাশ্মীরে শনিবার রাতেই গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে, যা এই চুক্তির ভঙ্গ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয় প্রশাসন, বাসিন্দা এবং রয়টার্সের প্রতিবেদকদের মতে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিস্ফোরণ শোনা যায়।
এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগে, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের সামরিক স্থাপনায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে প্রায় ৭০ জন নিহত হয়—যা গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র লড়াই হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক চাপের ফলে যুদ্ধবিরতির চুক্তি সম্ভব হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার রাতে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং লঙ্ঘনের জন্য ভারতকে দায়ী করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষায় সক্রিয় ও প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের জন্য মধ্যস্থতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা স্বস্তি নিয়ে এলেও, দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস এবং দোষারোপের রাজনীতি সংঘর্ষকে আবার জাগিয়ে তুলতে পারে। সাম্প্রতিক বার্তালাপ এবং হটলাইন যোগাযোগ এই পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে সহায়ক হতে পারে, তবে উভয় পক্ষের সদিচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপের উপরই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সম্ভাবনা।
ইবাংলা/ বাএ