ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের শক্তিশালী ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন।ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। বলা হচ্ছে, হামলায় নিহত বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতার মধ্যে সালামিও রয়েছেন।
ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলের গত রাতের হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কামন্ডার ইন চিফ জেনারেল হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, তেহরানে বিপ্লবী গার্ডের সদর দপ্তর ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমও ঘটনাস্থল থেকে আগুন এবং ধোঁয়া বের হওয়ার খবর দিচ্ছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থাটি বলেছে, তেহরানের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে হামলায় নারী ও শিশুসহ কয়েকজন শহীদ হয়েছেন।
আরও পড়ুন…এবার ইসরায়েলে হামলা শুরু করলো ইরান
এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইরান এই আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে। ইসরায়েলকে অবশ্যই এর ভয়াবহ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও জানিয়েছে, এ ধরনের আগ্রাসনের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, এখন ফল ভোগ করার পালা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক স্থাপনায় হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। যতক্ষণ না আমরা আমাদের মিশন শেষ না হয়, ততক্ষণ এই অভিযান চলবে।
এদিকে নেতানিয়াহুর সরকার ইসরায়েলজুড়ে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’ জারির ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার শঙ্কায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে আগাম প্রতিরোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ জানিয়েছে, তেহরান শহর ও এর আশপাশের এলাকায় একাধিক তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় ইরান তার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে এবং ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ বা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানো হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।