ফিটনেস ছাড়া চলছে নৌযান, ঘটছে দূর্ঘটনা

জসিম উদ্দিন, মোংলা (বাগেরহাট)

সার্ভে সনদ (পন্য পরিবহনের অনুমতি) নেই, তারপরও মোংলা বন্দর থেকে অবৈধ ভাবে পন্য পরিবহন করছে অহরহ নৌযান। হচ্ছে দূর্ঘটনার শিকারও। ১১ মাসে মোংলা বন্দরে ডুবেছে ৫ টি নৌযান।

সর্বশেষ সোমবার (১৫ নভেম্বর) বন্দর চ্যানেলের পশুর নদের হারবাড়িয়া এলাকায় ডুবে গেছে কয়লা বোঝাই ফারদিন-১ নামক একটি বাল্কহেড। এর আগে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রয়ারী ৭৫০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এম ভি বিবি-১১৪৮, ৩০ মার্চ ৫১০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এম ভি ইফসিয়া মাহিন।

৮ অক্টোবর ১২০০ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে এম ভি বিউটি অব লোহাগড়া-২, একই দিনে ৮৫২ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এমভি দেশ বন্ধু লাইটার ডুবেযায়। সর্বশেষ ডুবে যাওয়া বাল্কহেড ফারদিন-১ ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের প্রানহানির ঘটনা ঘটেছে।

এর মধ্যে দুই জনের মরদেহ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উদ্ধার হয়। এনিয়ে চলতি বছরের ১১ মাসেই পাঁচটি নৌ যান ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ডুবে যাওয়া ওইসব নৌ যান চলাচলের জন্য নৌ
পরিবহন অধিদপ্তরের( ডিজি শিপিং) কতৃক কোন সার্ভে সনদ ছিলনা।

কিভাবে চলছে ওইসব নৌযান আর এর জন্য কারা দায়ী? এমন প্রশ্নের জবাবে,নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের পরিদর্শক আবুল কাশেম মোঃ আবু জাফর জানান,দেশে চলাচলকারী নৌযানের দুই- তৃতীয়াংশ চলছে সার্ভে সনদ( চলাচলের অনুমতি) ব্যাতিত। তাই সব নৌযান গুলোকে সনদের আওতায় আনতে তারা কাজ করছেন বলে জানান। কারা দায়ী এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে রাজি হননি তিনি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ও সচিব কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, সোমবার (১৫ নভেম্বর) ডুবে যাওয়া ফারদিন-১ নামক বাল্কহেডটিরও সার্ভে সনদসহ বন্দর থেকে আমদানী পণ্য পরিবহনের অনুমতি ছিলনা। এছাড়া এর আগে যেসকল লাইটার বন্দর চ্যানেলে ডুবেগেছে সবকটি ফিটনেচ ছাড়াই পন্য পরিবহন করছিলো। তাই বন্দর চ্যানেল নিরাপদ রাখতে ফিটনেচ বিহীন সকল প্রকার নৌযানে পন্য পরিবহন না করতে আমদানীকারক, শিপিং এজেন্ট ও ক্যারিং প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানান হারবার মাস্টার।

তবে বন্দর থেকে ফিটনেচ বিহীন নৌযান আর বালুবাহী বাল্কহেডএ পন্য পরিবহন করার জন্য সরাসরি জড়িত বন্দরে আমদানী পন্য পরিবহন কাজে জড়িত ক্যারিয়ারগন। এমন দাবী করেন, বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক এসোসিয়েশনের মোংলা শাখার সহ সভাপতি মাইনুল হোসেন মিন্টু। তিনি বলেন, বেশি মুনাফার আশায় ফিটনেচ বিহীন লাইটার ছাড়াও কেবল বালুবাহী একশর অধিক বাল্কহেড কয়েক মাস ধরে মোংলা বন্দর থেকে আমদানী পন্য বহন করছে।

ফিটনেচ বিহীন নৌযান চলাচলের ফলে পন্য পরিবহনের পর দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ওইসব নৌযান গুলো। এর ফলে কয়লা, সার ও নৌযানে থাকা তেল নদীতে ভেসে সুন্দরবন ও এ অঞ্চলের মৎস্য ভান্ডারের ব্যাপক ক্ষতি করছে বলে জানান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ( বাপা) বাগেরহাট জেলা শাখার আহবায়ক নুর আলম শেখ। তাই ফিটনেচ বিহীন নৌযান চলাচল বন্ধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোকে এক সাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

ইবাংলা /টিআর /১৯  নভেম্বর ২০২১

ঘটছেচলছেছাড়াদূর্ঘটনানৌযানফিটনেচ
Comments (0)
Add Comment