খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হলে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করার হুমকিও দিয়েছেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত এমপিরা। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তারা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিদেশে যেতে না দেওয়ার কারণে উন্নত চিকিৎসার অভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে গেলে দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলটির সংসদ সদস্যরা।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে আজ রোববার (২১ নভেম্বর) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির এমপিরা।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন না।’
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দাবি ন্যায়সঙ্গত। এ দাবি মানা না হলে আমরা জাতীয় সংসদে থাকবে কি না, সেটি চিন্তাভাবনা করব। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে সারাদেশের মানুষ উজ্জীবিত হবে, এটি জেনে সরকার তাকে মুক্তি দিচ্ছে না। জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে পেছন ফিরে ‘ডিকটেড’ করেছেন, তা লজ্জাকর। আর আইনমন্ত্রী যেভাবে ব্যাখ্যা দেন, তা হাস্যকর।”
আরেক সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু সরকার চিকিৎসকের কথা উপেক্ষা করছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আবার জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার বাসভবনকে সাবজেল ঘোষণা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যে শারীরিক ভাষা দেখা গেছে, তাতে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কিছু আশা করি না। তাই রাষ্ট্রপতিকে তার ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।’
সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত রুমিন ফারহানা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সরকার ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার কিছু হলে দায় সরকারকেই নিতে হবে। দেশে আইনের শাসন থাকলে খালেদা জিয়া এমনিতেই জামিন পেতেন। এখনও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে। আইনমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা অপব্যাখ্যা।’
এমপি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এর আগে আমরা সংসদে বলেছি, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হলে আমরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করবো। সরকারের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, বিএনপি সংসদে থাক বা না থাক, তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না।’
অন্যদের মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ও আমিনুল ইসলাম মানববন্ধনে অংশ নেন। এ কর্মসূচি ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ইবাংলা /টিআর /২১ নভেম্বর ২০২১