অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, বাস রেকারে দিলেন ইবাংলার সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গত কয়েকদিন ধরে যাত্রীদের থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এতে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে প্রতিদিনই বিতণ্ডা হচ্ছে। এর জেরে একাধিকবার বাস চলাচল বন্ধও রেখেছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ডিজেলের দাম বাড়ার পর সিএনজিচালিত গাড়িগুলোতেও ভাড়া বাড়িয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না।

প্রতিদিনের মতো রোববার (২১ নভেম্বর) ইবাংলা নিউজপোর্টালের সাংবাদিক মো. নাঈম মহাখালি থেকে মিরপুরে অফিসে আসার জন্য আলিফ পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। গাড়ির হেলপার ওই সাংবাদিকের কাছে বেশি ভাড়া দাবি করেন।  তিনি ভাড়ার নতুন চার্ট দেখতে চাইলে বাস হেলপার সাভার থেকে ফেরার একটা চার্ট দেখান।  বিষয়টি অবহিত করার পর হেলপার কোনো সদুত্তর না দিয়ে চলে যান।

আরও পড়ুন: ‘সিটিং সার্ভিস অযৌক্তিক ও অন্যায় দাবি’

কিছুক্ষণ পরই আলিফ পরিবহনের একজন চেকার গাড়িতে উঠেন। ইবাংলা পত্রিকার সাংবাদিক তাকে বলেন, ভাই আপনাদের ভাড়ার চার্ট কোথায়? উত্তরে তিনিও সাভার থেকে ফেরার চার্ট দেখান। তখন বাসের যাত্রীরা তাকে ধরলে তিনিও সদুত্তর না দিয়ে চলে যান।  পরে হেলপার সিটিং ভাড়া চাইলে যাত্রীরা একযোগে তেড়ে আসেন। শার্টের কলার ধরে টানাটানি করেন। হেলপার বলেন, আমরা কি করবো? মালিক টাকা নেয় সিটিং সার্ভিস ধরে।

সাংবাদিক মো. নাঈম গাড়ির হেলপারকে বলেন, আপনাদের ভাড়ার চার্টে লেখা ১৬ টাকা আপনি কেন ২৫ টাকা নিচ্ছেন? হেলপার নিরুপায় হয়ে বলেন, স্যার আমাদের কী করার আছে বলেন? আপনারা ২৫ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে, আর না হয় গাড়ি থেকে নেমে যান। কথা না বাড়িয়ে ইবাংলা পত্রিকার সাংবাদিক পুলিশের আশ্রয় নেয়।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে বাস চলাচল বন্ধ

ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে আসলে সাংবাদিক এবং যাত্রীরা চালককে বাস থামতে বল্লে, সে বাস না থামিয়ে টান দিতে চায়। তখন চালককে ধমক দিয়ে ট্রাফিক বক্সের সামনে থামায়। মৌখিক অভিযোগ করেন ইবাংলা পত্রিকার সাংবাদিক মো. নাঈম।

তিনি পুলিশ বক্সের অফিসার আবু তাহেরকে বলেন, ভাই আপনি দেখেন চার্টের ভাড়া থেকে ৯-১০ টাকা বেশি নিচ্ছে। তিনি ব্যাবস্থা নিবে বলে আশ্বাস দেন। মিনিট ১০ পরে একটি রেকার ডেকে গাড়িটি পাঠিয়ে দেন । রেকার নাম্বর ( ৩৫৭৩২) পরে সকল যাত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন ইবাংলার সাংবাদিক মো. নাঈম।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল করবে। যারা সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়কে বাস নামাবে না বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: সিএনজিচালিত বাসেও ডিজেলের ভাড়া

তিনি বলেন, শ্রমিকদের অন্যায় দাবি মেনে নেওয়া হবে না। যেসব মালিক শ্রমিকদের অন্যায় দাবিকে প্রশ্রয় দিয়ে বাড়তি মুনাফা অর্জন করতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে সম্প্রতি গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ১৪ নভেম্বর থেকে নগরীতে কোনো ধরণের ‘সিটিং সার্ভিস’ অথবা ‘গেটলক সার্ভিস’ বাসের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। অপরদিকে ভাড়া বাড়ানোর কারণে প্রায় প্রতিদিনই সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছে।

এখন রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে বাকবিতণ্ডা। এতে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ত্যাক্ত-বিরক্ত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

ইবাংলা / নাঈম/ ২১ নভেম্বর ২০২১ 

ট্রাফিকপঞ্চমুখপুলিশপ্রশংসাযাত্রীশ্রমিকসাংবাদিক
Comments (0)
Add Comment