টাইগারদের মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দেখতে হলো। মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামের আচরণ যেন অচেনা হয়ে গেল। বাংলাদেশ দল যে মাঠে অপ্রতিরোধ্য, সেই মিরপুরেই কি না হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেতে হলো। এইতো বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো দলগুলোকে বড় ব্যবধানে সিরিজে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে পাকিস্তানের কাছে পাত্তাই পেল না! এ নিয়ে টানা আট ম্যাচে হারল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটিতে হেরে আগেই সিরিজ খোয়ানো। সোমবার (২২ নভেম্বর) পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে মাঠে নেমেছিল তারা । টাইগার একাদশে তিন পরিবর্তন আর পাকিস্তান একাদশে ছিল চারটি পরিবর্তন।
টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টস জিতে সিদ্ধান্ত নেন ব্যাট করতে। আগের দুই ম্যাচেও টসের ফলাফল ছিল একই। তেমনই আগে ব্যাট করে প্রথম ম্যাচে ১২৭ আর দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৮ রান করা বাংলাদেশ আজ তৃতীয় ম্যাচে করেছিল ১২৪ রান।এই কটা রান তুলতে অবশ্য বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানকে। দুই ওপেনার বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট হারালেও ৫ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান দল।
দুই ওপেনারের জুটি থেকে আসে ৩২ রান। ৬.৬ ওভারের সময় বাবর আজমকে ১৯ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এরপর থিতু হওয়া রিজওয়ানকে ৪০ (৪৩) রানে বোল্ড করে ফেরান অভিষিক্ত শহিদুল ইসলাম।
শেষ ওভারে জিততে হলে পাকিস্তানের লাগত ৮ রান। মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন ৬ রান করা সরফরাজকে। তৃতীয় বলে আবারও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আঘাত। স্ট্রাইকে থাকা হায়দার আলীকে (৪৫) ফিরিয়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করলেও চতুর্থ বলে ছয় হাঁকান ইফতিখার আহমেদ, পরের বলে আবারও বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট মিড উইকেটে থাকা ইয়াসিরের হাতে। শেষ বলে যখন ২ রান প্রয়োজন, তখন চার হাঁকিয়ে পাকিস্তানকে উদ্ধার করেন মোহাম্মদ নেওয়াজ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। নড়বড়ে ওপেনিং জুটি ভুগিয়েছে সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। সেই ব্যর্থতার রেষ এখনও কাটেনি বাংলাদেশের ব্যাটারদের। নাঈম শেখের সঙ্গে পাকিস্তান সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ওপেনিং করেন সাইফ হাসান। দুই ম্যাচ মিলে ৯ বলে করেন ১ রান। তাই বাদ পড়তে হয়েছে তৃতীয় ম্যাচে।
সাইফের বদলে ওপেনিংয়ে নাজমুল হোসেন শান্তকে আনলেও ভাগ্যের বদল হয়নি। আগের ম্যাচে চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলা শান্ত এদিন সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত পেসার শাহনেওজ দাহানির বলে বোল্ড হয়ে মাত্র ৫ রান করে।
এরপর শামিম পাটোয়ারি তিনে ব্যাট করতে এসে ২৩ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন উসমান কাদিরের বলে ক্যাচ দিয়ে। ৭.২ ওভারে দলীয় ৩৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাক ফুটে থাকা দলকে লিড দিচ্ছেন নাঈম শেখ ও আফিফ হোসেন।
নাঈম কিছুটা ধীর গতিতে রান তুললেও আফিফের ব্যাটে আসছে দ্রুত রান। ১২তম ওভারের প্রথম ও শেষ বলে দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন আফিফ। নাঈম-শান্তর জুটি ভাঙে ৪২ বলে ৪৩ রান যোগ করে আফিফের ২০ (২১) রানে বিদায়ে।
এরপর একপাশ আগলে রাখেন নাঈম, সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অর্ধশতকের অনেক কাছে গিয়েও ফুল্টোস বলে ক্যাচ তুলে দেন বোলার ওয়াসিম জুনিয়রের হাতেই।
নাঈম শেখ বিদায় নেন ৪৯ বলে ৪৭ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ২টি করে চার ও ছয়। নুরুল হাসান সোহানও ব্যর্থ হন ৪ রান করে ওয়াসিমের বলে ক্যাচ দিয়ে। সোহানের বিদায়ের পর হারিস রৌফের বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১৩)। শেষ ৫ ওভারে এসেছে মাত্র ৩৫ রান। শেখ মেহেদীর ৫ ও আমিনুল ইসলামের ৩ রানে ভর করে ৬ উইকেটে ১২৪ রান করেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম ও উসমান কাদির। ১ উইকেট করে নেন দাহানি ও রৌফ।
ইবাংলা / নাঈম/ ২২ নভেম্বর ২০২১