সবুজ চোখের অধিকারী আফগান কন্যা শরবত গুলার কথা নিশ্চয়ই মনে আছ। যার চাহনি নজর কেড়েছিল গোটা বিশ্বের। ১৯৮৪ সালের কথা। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল তার ছবি। যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। প্রচ্ছদে শরবত গুলার ছবি প্রকাশিত হতেই তা যেন প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানিস্তানবাসী। আর তাদের মতো শরবত গুলাও আর্জি জানিয়েছেন। তার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছে ইতালি সরকার। প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির কার্যালয়ের তরফে জানান হয়েছে শরবত গুলার আর্জি মেনে তাকে ইতালিতে নিরাপদ আশ্রয় দিতে সাহায্য করবে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সম্প্রতি এই বিষয়টি জানিয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর ছবি তুলতেন চিত্রগ্রাহক স্টিভ ম্যাককারি। চার দশক আগে তিনিই এই আগুন ঝরানো দৃষ্টি প্রথম খুঁজে পেয়েছিলেন। হঠাৎই চোখে পড়ে শরবতের ‘দৃষ্টি’, মুহূর্তে লেন্সবন্দি, মুহূর্তে আলোড়ন তৈরি।
এরপর ২০০২ সালে ফের স্টিভই খুঁজে পান শরবত গুলাকে। এরপর ২০১৪-তে পাকিস্তানে দেখা যায় তাকে। সেখানে নকল পাক আইডি বানানোর অভিযোগে ধরা পড়েন তিনি। তার ‘সবুজ রঙা চোখ’ ততদিনে জনপ্রিয়। পরিচয় জানতে পেরে তাকে দেশে ফেরায় আফগানিস্তান। মাথা গোঁজার জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্টও দেওয়া হয়।
কিন্তু ফের অশান্ত আফগানিস্তান। তালেবানদের শাসনে ফের রক্তস্নাত অলিগলি৷ বোমা, গুলির আওয়াজে অনিদ্রিত জীবনে ফিরল চার দশক আগের সেই সময়, সেই ভীতি, সেই আতঙ্ক, সেই চোখ৷ শরবতের আর্জি জানায় সে দৃষ্টি আজও প্রাসঙ্গিক। সেই চাহনির আজ বয়স বেড়েছে অনেকটাই। তাই আগুনে চাহনিতে আজ মিশেছে আর্জি। দেশ ছেড়ে প্রাণ বাঁচানোর আর্জি।
ইবাংলা / নাঈম/ ২৭ নভেম্বর, ২০২১