ভারতের ভূপ্রকৃতি যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি দেশটিতে নানান মানুষের বসবাস। বৈচিত্র্যময় ভারতে কয়েকটি গ্রাম রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান পাহাড়ঘেরা দুর্গম জায়গায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ফুট নিচে। সেসব গ্রামে দিব্যি বসবাস করছে মানুষ। সেখানে নিজেদের জন্য নিজেদের নিয়ে একটি স্বনির্ভর সমাজ গড়ে তুলেছে তারা। একে ‘পাতালপুরী’তে মানুষের বসবাস বললেও ভুল হবে না। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে তাঁদের বড্ড অনীহা।
এখানকার অধিবাসীরা বাইরের দুনিয়ার কোনো খবরই রাখে না তারা। প্রয়োজনও পড়ে না। পৃথিবীর কত ঘটনা ঘটছে। সেসবও তাদের স্পর্শ করে না। এমনকি আজ পর্যন্ত করোনা মহামারিও পৌঁছায়নি এখানে। ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের চিনদোয়ারা জেলা শহর থেকে ৭৮ কিলোমিটার দূরে দুর্গম সাতপুরা পাহাড়।
আরও পড়ুন : টিকা নিলে মদের দামে ১০% ছাড়
এই পাহাড়েই বিস্ময়কর এই জায়গাটির অবস্থান। চারপাশে পাহাড়। আর মাঝখানের উপত্যকায় ১২টি গ্রাম। জনসংখ্যা তিন হাজারের কিছু কম। গ্রামগুলোতে বিশাল বিশাল গাছ রয়েছে। আর গাছগুলো ঘন হওয়ায় অনেক জায়গায় দিনের পর দিন সূর্যের আলো পৌঁছায় না। ফলে এলাকাটি অন্ধকারাচ্ছন্ন, স্যাঁতসেঁতে আর রহস্যময় হয়ে উঠেছে। মাটির গভীরে অবস্থিত গ্রামপুঞ্জটির নাম পাতালকোট। গ্রামগুলোতে ভুরিয়া নামে এক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে। তারা এখানে কুঁড়েঘরে বাস করে।
পাহাড় ও প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে তাদের জীবনযাপন। অধিবাসীদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। নিজেদের খাবার নিজেরাই উৎপাদন করে। তেল উৎপাদন করতে পারে না তারা। সে সঙ্গে লবণ। এ দুটো জিনিসের জন্য তাদের গ্রামের বাইরে আসতে হয়। আর তাই বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। আগে দুর্গম এসব গ্রাম বাইরের জগৎ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল।
আরও পড়ুন : বান্ধবীর পেট থেকে নবজাতক চুরি!
সম্প্রতি এই এলাকাকে নিকটস্থ শহরের সঙ্গে সড়কপথে সংযুক্ত করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। পর্যটকদের জন্য পাতালকোটের দরজা খুলে দিতেই সরকারের এই উদ্যোগ। বহু গাছপালার সমাহার নিয়ে পাতালকোট যেন একটা ভেষজ ওষুধের ভাণ্ডার। এখানকার মানুষ নিজেদের চিকিৎসা নিজেরাই করে।
ইবাংলা/এএমখান/২৮ নভেম্বর, ২০২১