কারাবন্দি থেকেও চেয়ারম্যান নির্বাচিত
ইবাংলা ডেস্ক
প্রচার-প্রচারণা, পোস্টার লাগানো, মাইকিংসহ নির্বাচনের অনেক কিছুই ঠিকভাবে করতে না পারেননি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। তাই তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপরও বিজয়ী হযেছেন অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ তুফান।
তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।
গত ২৬ ডিসেম্বর তিনি উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীকে আট হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিজয়ী তুফানের পক্ষে শুধুমাত্র তার স্ত্রী রোজিনা আকতার পলি প্রচারনা চালিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী তুফান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন আট হাজার ১৬৫ ভোট। আর বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পলাশ আনারস প্রতীকে পাঁচ হাজার ৪৪৫ ভোট পেয়েছেন। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিক পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৪২৮ ভোট।
বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান বাউসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবার তাকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিককে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। এটি মেনে নিতে পারেননি সাবেক চেয়ারম্যান তুফান। তাই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্রোহী হিসেবেও প্রার্থীতা তুলে না নেয়ায় গত ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা তুফানের টলটলিপাড়ার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালান। ভাংচুর করা হয় তার বাড়ি। এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে আওয়ামী কর্মীদের ধরে গণপিটুনি দেন। পরের দিন ৫ ডিসেম্বর সকালে তুফান মামলা করতে বাঘা থানায় গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। আদালত কয়েক দফা তার জামিন নামঞ্জুর করেন। ভোটের আগে তুফানকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়।
বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় একাধিকবার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রচারণার জন্য মাইকিং নিয়ে বের হলেই ভাংচুর করা হয়। তবে স্বামীর পক্ষে স্ত্রী রোজিনা একাই প্রচারণা চালিয়েছেন গ্রাম মহল্লা ঘুরে ঘুরে। শেষ পর্যন্ত এলাকার মানুষ বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন তুফানকেই।
রোজিনা আকতারি পলি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে আমার স্বামীর বিজয়ের মাধ্যমে মূলত বাউসা ইউনিয়নের মানুষের বিজয় হয়েছে। তারা ভোটের মাধ্যমে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দেখিয়ে দিয়েছেন। যারা গায়ের জোরে আমার স্বামীকে ভোট থেকে সরাতে চেয়েছিল। জনগণ তাদের পক্ষে ছিল না। এলাকার মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে নীরবে প্রতিবাদ করেছে।
ইবাংলা /এইচ/ ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১