মাদারীপুরে ভবন হস্তান্তরের আগেই “হালকা বাতাসেই” খুলে পড়ল গ্লাস

রাকিব হাসান, মাদারীপুর

মাদারীপুরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি সমন্বিত অফিসসমূহের দশ তলা ভবনের জানালার ২৪টি গ্লাস হালকা বাতাসেই খুলে পড়ে ভেঙে গেছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সঠিকভাবে গ্লাসগুলো স্থাপন করা হয়নি, এমন অভিযোগে ঠিকাদার ও গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ একে অপরকে দায়ী করছেন।

হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্র্যাস্টের মাদারীপুর জেলা সহকারী পরিচালক মুহিত উদ্দিন মোল্লা বলেন, গত ২ দিন আগে দমকা হাওয়া প্রবাহিত হয়েছিল। সেখানে সমন্বিত সরকারি ভবনের ৬তলার পূর্বপাশের ব্লকের ৬০৭ থেকে ৬০৯ রুম হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস কক্ষের পূর্ব পাশের জানালাগুলো সব ভেঙে যায়। ভাঙা অংশের কিছু কিছু অংশ অফিস কক্ষে প্রবেশ করে এবং জানালার পাশে থাকা কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিনসহ আরও সরঞ্জামাদি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো পুরোপুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিনি। তবে আপাতত আমাদের ফটোকপির মেশিনটি চালু হচ্ছে না।

সরেজমিন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের শকুনি লেকেরপাড়ে গত ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি সমন্বিত অফিসসমূহের জন্য নির্মিত ১০তলা ভবনে ২৫টি অফিসের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। যে অংশ ভেঙে গেছে, সেই অংশের রুমগুলোতে এখনো কোনো অফিস কার্যক্রম শুরু হয়নি। এই ঘটনায় ত্রুটিপূর্ণভাবে জানালার গ্লাসগুলো স্থাপন করার অভিযোগ উঠলে ঠিকাদার ও গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভবন নির্মাণ করেছে। সেই ভবন এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সামান্য বাতাসেই ভবনের জানালার গ্লাস ভেঙে পড়েছে। এটা কারও মাথার ওপর পড়লে ঘটতে পারত বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মাদারীপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নতুন ১০তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় গ্লাসগুলো যখন জানালায় স্থাপন করা হয়, তখন সঠিকভাবে স্থাপন না করার কারণেই বাতাসে ভেঙে পড়ে গেছে। এখন আমরা বিষয়টি ঢাকায় জানিয়েছি। খুব দ্রুত ভবনের আরও কী কী ধরনের সমস্যা আছে, সেসব বিষয় একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখব। তিনি আরও বলেন, ভবন এখনো হস্তান্তর হয়নি। তাই এই ত্রুটি ঠিকাদার নিজ খরচেই সমাধন করবে।

ভবনের স্থানীয় ঠিকাদার সৈয়দ আবুল বাশার বলেন, ৬তলার জানালার গ্লাসগুলো বাতাসে ভেঙে পড়ার পেছনে আমাদের কোনো ভুল ছিল না। যদি ভুল থেকে থাকে, সেটা গণপূর্ত কর্মকর্তাদের। আমাদের কর্মীরা তো ঠিকমতোই গ্লাসগুলো বসিয়েছে। এটা দেখা ও মনিটর করার কথা ইঞ্জিনিয়ারদের। এখন তারাই ভালো বলতে পারবে, কী কারণে গ্লাসগুলো ভেঙে গেছে। আমরা বলতে পারব না। আমরা ঠিক ভাবেই বসিয়েছিলাম।

মাদারীপুর গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শহরের শকুনি লেকের উত্তর পাড়ের পুরনো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জমিতে ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচে ২০১৬ সালে ১০তলা সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। যা শেষ হয় গেল বছরের আগস্ট মাসে।

ইবাংলা/ এইচ/ ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

Contact Us