চলতি বছরের ২৫ মার্চ ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড পেতে যাচ্ছেন সারাদেশের ১ লাখ ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা। এদিন একযোগে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা অথবা তাদের পরিবারের মাঝে এসব সনদ ও আইডি কার্ড বিতরণ করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ লাখ ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড তৈরির কাজ শেষ হলেই নির্ধারিত সময়ে তা সারাদেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে পৌঁছে যাবে। সারাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্ব স্ব উপজেলা থেকে ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এজন্য তাদের কোনো ধরনের আবেদন বা ফরম পূরণ করতে হবে না। আর ১ লাখ ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা বেঁচে নেই তাদের পরিবারকে ডিজিটাল সনদ দেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। তাই চলতি বছরের ২৬ মার্চের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৫ মার্চ সারাদেশে প্রায় ১ লাখ জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হবে। একইসঙ্গে জীবিত নেই এমন প্রায় ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের কাছে ডিজিটাল সনদ হস্তান্তর করা হবে।
ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ডের প্রকল্প পরিচালক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. দুলাল কৃষ্ণ রায় বলেন, আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সারাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা একইসঙ্গে এসব ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাবেন। আমাদের এ কাজ এগিয়ে চলছে।
দেশের উপজেলাগুলোতে ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো এ সনদ ও আইডি কার্ড পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়নি। ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড তৈরির কাজ এখনো চলছে। প্রিন্ট করার পরই এগুলো পাঠানোর কাজ শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা চলতি বছরের ২৬ মাছের মধ্যে কার্ড বিতরণ করা। যেহেতু ২৬ মার্চ সবাই স্বাধীনতা দিবস পালন করবো তাই আমরা ঐদিন না করে ২৫ মার্চ সারাদেশে একযোগে ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ করবো। প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ২৫ মার্চের আগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাঠিয়ে দেব। বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নিজ নিজ উপজেলা কার্যালয় থেকে এগুলো সংগ্রহ করবেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাওয়া মানে, তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এটাই তার বড় পরিচয়। ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ড দেখালেই তারা সরকারি যানবাহনে বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করাসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
এ ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কী কী সুযোগ সুবিধা পাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি যানবাহনে বিনামূল্যে চলাচলের সুবিধা পাবেন। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবাও পাবেন। চিকিৎসাসেবার আওতায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে- সবধরনের ডাক্তারি সেবা, শৈল্য চিকিৎসা, ওষুধ ক্রয় ও সরবরাহ, বেডভাড়া, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ এবং সেবিকার সেবা।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর নামীদামি হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসাসেবার অন্তর্ভুক্ত সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন। এছাড়া রাজধানীতে ১৫টি বিশেষায়িত হাসপাতালে তারা বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা পাবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্ধারণ করে দেবে।
ইবাংলা/ নাঈম/ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২