বেতাগীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্বাস নির্মাণের অনিয়ম

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা

বরগুনার বেতাগীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বীর নিবাস প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এক বীর মুক্তিযোদ্ধার ঘর বানাতে ব্যবহৃত ইট,খোয়া ও সিমেন্ট নিম্নমানের হওয়ায় তৈরিকৃত দেয়াল নির্মাণের পরপরই ভেঙে পড়েছে।

ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ বলেন, সঠিকভাবে তদারকি না হয় দেওয়াল ভেঙে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যার নামকরণ হয় ‘বীর নিবাস’। এ উপজেলায় প্রথম ধাপে ৯টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি ঘরে নির্মাণব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। দরপত্রের প্রাক্কলন অনুযায়ী গত ৪ নভেম্বর নির্মাণকাজের উদ্ধোধন করে উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই উপহার পেয়ে যতটা খুশি হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের ততটাই দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ঠিকাদারের নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার।

বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম ফারুক শিকদারের বরাদ্দকৃত ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া, সিমেন্ট ও লোহার রড ব্যবহার করা হয়েছে। এতে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। শেষ বয়সে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ভোগ করতে পারব কিনা সন্দেহ।

তাছাড়া সঠিকভাবে তদারকি করেনি বলে দেয়াল ভেঙে পড়েছে। ভালো মালামাল দিলে হয়তো ভেঙে পড়তো না। শুধু আমারটা নয়, বাকি ৮টিতেও নিম্নমানের এ সামগ্রী ব্যবহার করছে ঠিকাদার।

বরাদ্দকৃত ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের কাজ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার নাসির আহমেদ পেলে তার কাছ থেকে ওই দরপত্রের প্রাক্কলনটি কিনে নেন বেতাগী উপজেলার নাসির এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম নাসির।

সরেজমিনে দেখা যায়, বীর নিবাসের ওই ঘর নির্মাণে ব্যবহৃত ইট এবং সিমেন্ট নিম্নমানের হওয়ায় তৈরিকৃত দেয়াল নির্মাণের পরপরই ভেঙে পড়ছে। ভেঙে পড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে সুজন শিকদার জানান, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে দেখে ঠিকাদার নাসির ভাইকে এগুলো পরিবর্তন করে দিতে বলি। কিন্তু ঠিকাদার এগুলোই ব্যবহার করেন।

এই বিষয়ে নাসির এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ঠিকাদার তরিকুল ইসলাম নাসির মুঠোফোনে বলেন, ভাই এ বিষয়ে আমি আপনাদের সাথে কথা বলবোনা। আপনারা বেতাগীর সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ইরান আমার ছোট ভাই! আপনারা তার সাথে কথা বলেন!?

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, ঠিকাদার নিম্নমানের ইট এবং খারাপ বালু ব্যবহার করায়, ভিতরে একটি দেয়াল ধসে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নাসির ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

ইবাংলা/ নাঈম/ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

Contact Us