অমর একুশে বইমেলার আজ নবম দিন। গতকালের (২১ ফেব্রুয়ারি) তুলনায় লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও বেশি ভিড় দেখা গেছে ফুড কর্নারগুলোতে। তারাও বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার নিয়ে বসে আছেন ভোজনরসিকদের অপেক্ষায়। প্রতিবছরের মতো এবারো ফুড কর্নারে পাওয়া যাচ্ছে কফি, আইসক্রিম, বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও আচার, ফুচকা, চটপটি, চিকেন চাপ, চিকেন বিরিয়ানি, তেহারি, চিকেন ঝাল ফ্রাই, লুচি, চিকেন মাসালা, ছোলা বাটোরা ইত্যাদি।
খাবারগুলো খেতে যতোটা মুখরোচক দাম ততোটা আকাশচুম্বী। এক কাপ কফির দাম এখানে ৩০ টাকা। শুধু তাই নয় ফুচকার প্লেট প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। চটপটি ৬০ টাকা, চিকেন চাপ ১৬০ টাকা, চিকেন বিরিয়ানি ২০০ টাকা। এখানে মুরগির মাংসের দাম ১৭০ টাকা। একটি লুচির দামও রাখা হচ্ছে ২০ টাকা। সিঙ্গারা এবং সমুচা দাম ১০ টাকা।
পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে ঘুরতে আসা সাইফুল সরকার বলেন, ছেলেমেয়ে নিয়ে বইমেলায় এসেছি। তাদের ক্ষুধা লাগায় খেতে বসলাম। কিন্তু দাম দেখে কি খাবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। যেহেতু ফুড কর্নারগুলো বইমেলা উপলক্ষে খোলা সেহেতু খাবারগুলোর দাম সর্ব সাধারাণের হাতের মুঠোয় থাকলে ভালো হতো বলে আমি মনে করি।
চার প্লেট ফুচকা আর্ডার দিয়ে বিপদে পড়েছে মিরপুর থেকে আসা চার বন্ধুবান্ধব। তারা বলেন, আমরা বাইরে প্রায়ই ফুচকা খাই। দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়। এখানে এমনটা ভেবে খেতে বসে জানলাম ফুচকার প্লেট ৮০ টাকা। প্লেটের দিকে তিকেয়ে দেখন কয় পিস বা ফুচকা আছে। এরাতো প্রায় ডাকাতি শুরু করেছে।
অন্যদিকে ডিএমপি পুলিশদের একটি ফুড কর্নার আছে বইমেলায়। এখানে প্রায় প্রতিটি খাবারের মূল্য অন্যদের তুলনায় অনেক কম। খাবার মূল্য তালিকাও ঝুলানো আছে। কিন্তু অন্যান্য ফুড কর্নারের সামনে তেমন কোনও মূল্য তালিকা দেয়া নাই।
খাবারগুলোর দামবেশি দর্শদার্থীদের এমন অভিযোগে ফুড কর্নারের মালিকগণ বলছে, একটি খাবার সামনে দেখছেন কিন্তু তার পেছনের খরচ এবং পরিশ্রম দেখছেন না আপনারা। আপনারাই বলুন এখন বাজারের কি অবস্থা। আমারাতো মনে করি বাজারের অবস্থা বিবেচনায় না এনে সকলের জন্য একটি ন্যায্য দাম রাখছি। কোনো খাবারের দাম বেশি রাখা হয়নি। আর খাবারের টেস্ট এখনও কেউ খারাপ বলেনি। যার মান ভালো, তার দামতো একটু বেশি হবেই।
উল্লেখ, বইমেলায় ফুড কর্নারের পাশাপাশি থাকছে লেখক মঞ্চ, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থা। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছে মোবাইল কোর্ট। রয়েছে তথ্য কেন্দ্র, টয়লেট ও খাবারের ব্যবস্থা। মেলায় ঢুকার জন্য রয়েছে ৪টি প্রবেশ পথ ও বের হওয়ার জন্য রয়েছে ৩টি পথ। স্বাস্থ্যবিধি মানারও কড়াকড়িতা লক্ষণীয়। তবে করোনার কারণে শিশুপ্রহর থাকছে না মেলায়।
ইবাংলা/ নাঈম / ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২