বরগুনার বামনার ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা ফেরতের সততা পাওয়া গেলে। হুমকি ধামকি দিচ্ছেন “দেশের যে প্রান্তেই থাকি তোকে দেখে নেব” এই বলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে শাসালেন ওসি
জেলার বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগে থানা গারদে আটক রেখে মোটা অংকের চাঁদা নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভূগি রাসেল ওসির বিরুদ্ধে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ওসি ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে দেন।
পরবর্তীতে ওসি আরো হুমকি দামকি দিলে রাসেলের বোন সাহানা বাদী হয়ে বরিশাল বিভাগীয় উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সার্কেল) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শনিবার (২ এপ্রিল) এ বিষয়ে পুলিশের সার্কেল তোফায়েল হোসেন সরকারের তার তদন্তে ঘুষ নেয়া ও ফেরত দেয়াসহ অনেক অভিযোগের সততা পেয়েছেন। অপরদিকে ওসি হুমকি দামকি দিয়ে বলেন,দেশের যে প্রান্তে থাকি না কেন রাসেল তোকে আমি দেখে নেব।
মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মল্লিকের সন্তান রাসেল মল্লিক নামের এক ব্যাবসায়ীকে দেখিয়ে দেবার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,সম্প্রতিতে তিনি মিথ্যা অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী রাসেল মল্লিকের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে পরে ৯৯৯ এ কল করায় সে ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি ভুয়া অভিযোগ এনে নিরীহ মানুষকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে পুনরায় লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছিলেন।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সকালে বরগুনা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক এর মাধ্যমে বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার বরাবর বামনার ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ব্যাবসায়ী রাসেলের বড় বোন শাহানা বেগম।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন,বরগুনার বামনা উপজেলার খোলপটুয়া বাজারে ইলেকট্রিক ব্যাবসায়ী রাসেল মল্লিক দুই নম্বর ইলেকট্রিক পন্য বিক্রি করার অভিযোগ এনে ওসি বশিরুল আলম ব্যবসায়ী রাসেলকে থানায় ডাকেন।
পরে স্বজনরা থানায় গেলে ওসি বলেন রাসেল নিন্মমানের তার বিক্রি করে। ওকে এখন কোর্টে চালান দেওয়া হবে। এসব ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা ব্যাবসায়ী রাসেলের স্বজনের কাছে ঘুষ দাবি করে। পরে স্বজনরা কোন উপায় না পেয়ে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।
পরে ব্যাবসায়ী রাসেল মল্লিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে ২০ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি জানান। পরে ওসি বশিরুল আলম ঘুষ নেওয়া ২০ হাজার টাকা আবার রাসেলকে ফেরত দিয়ে পরিবারের সকলকে শাসিয়ে যায় এবং বলে তোদের কপাল পুড়ছে। তোদেরকে দেখিয়ে নিবো এসব বলে চলে যায়।
এছাড়াও গত তিন দিন আগে ভুক্তবোগী রাসেল ও তার পরিবার সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় একটি অসাধু চক্রকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে হয়রানি করছে এবং মামলার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা আবারও চাঁদা দাবি করেন তিনি।
ব্যাবসায়ী রাসেল মল্লিক বলেন,কিছুদিন আগে বামনার ওসি বশিরুল আলম স্যারে আমাকে দোকানে ডেকে এনে তালা ভেঙে দুই কয়েন তারসহ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে বলেন তুই দুই নম্বর তার বিক্রি করো। তোকে এখন কোর্টে চালান দিবো। এসব বলে আমাকে থাপ্পড় মারে।
পরে আমার স্বজনরা থানায় এলে তাদের কাছে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। টাকা না দিলে আমাকে কোর্টে চালান দিবে। এক পর্যায় ২০ হাজার টাকা ওসিকে দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। পরে আমি ৯৯৯এ ফোন দিলে ওসি আমাকে টাকা ফেরত দিয়ে অনেক ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায় এবং বলে এ মজা বুজামু আনে।
তিনি আরও বলেন- কিছুদিন আগে এবিষয়ে ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে আমার বড় বোন বরগুনা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিকের মাধ্যমে বিভাগীয় কমিশনার বারবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে সেই থেকে আমাকে ও আমার পরিবারকে নানা হুমকিসহ ভয়বিতী দেখিয়ে আসছেন এবং বলেন আমি দেশের যেইপ্রান্তে থাকি তোকে দেখে নিবো। অভিযুক্ত বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা,এরকম কিছুই হয়নি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সার্কেল) তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন, এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলামান,অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে পুলিশ সুপার বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
ইবাংলা/ জেএন/ ২ এপ্রিল, ২০২২