জনগণ বুঝে গেছে বিএনপি’র আন্দোলনের ডাক দুরভিসন্ধিমূলক ফাঁকা আওয়াজ, যা মিথ্যাবাদী রাখাল ও বাঘের শিশুতোষ গল্পের কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের লক্ষে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ইউনিট গুলোর মাঝে সদস্য সংগ্রহ বই বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
‘বিএনপি’র আন্দোলনের নেতা কে? জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগ জনগণকে বিভ্রান্ত করছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের নয়, এই প্রশ্ন জনগণের। জনগণই জানতে চেয়েছে বিএনপি’র আন্দোলনের নেতা কে?
সেতুমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি যে কথায় কথায় গণ-অভ্যুত্থানের স্বপ্ন দেখে তাতে বিএনপি’র কে নেতৃত্ব দিবে?
তিনি বলেন, বিএনপি যাকে আন্দোলনের নেতা বলছে সে তো দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছে। জনগণ সেই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে কেন গণঅভ্যুত্থান করবে?
মিথ্যাচার আর বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে জনগণের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে বিএনপি’র প্রতি আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন ও নির্বাচনের ব্যর্থতা থেকেও বিএনপি শিক্ষা নিতে পারেনি?
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপি’র গণঅনশনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি সবকিছু বেলা শেষ হয়ে গেলে করে। যখন যেটা করা দরকার, তাদের কর্মসূচি তার ধারে কাছে ও নেই। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমতে শুরু করেছে। তাই তাদের আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। দ্রব্যমূল্যের দাম কমে আসছে, কমে যাবে।
বিএনপি একেক সময় একেক কথা বলে উল্লেখ করে কাদের বলেন, তারা কখনো নিরপেক্ষ সরকার, কখনো নির্বাচনকালীন সরকার এখন আবার বিএনপি নেতাদের জাতীয় সরকারের ভুত মাথায় ঢুকেছে। আসলে বিএনপি কি চায় তা নিজেরাও জানে না।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এদিক-ওদিক না ঘুরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। অনেক ষড়যন্ত্র করেও গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কোন লাভ হয়নি। বাকি সময়েও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সময় ও নদীর ¯্রােত যেমন কারো জন্য অপেক্ষা করে না তেমনই নির্বাচনও বিএনপি’র জন্য অপেক্ষা করবে না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও একইভাবে যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ যাকে চাইবে সেই ক্ষমতায় আসবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাই সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দরকার সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ। তাই আসুন সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ গড়ে তুলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও মজবুত করি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও সুসংগঠিত করার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ জন্য সারা দেশের দলের কোন্দল-কলহ দূর করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ইউনিট গুলোর মাঝে সদস্য সংগ্রহ বই বিতরণ করা হয়। এতেই প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন যাদের দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক কার্যক্রম বিদ্যমান বলে জানান তিনি।
আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২০২৩/২৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ লক্ষে দলকে এখন থেকেই আরও সুসংগঠিত ও স্মার্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, এডভোকেট আফজাল হোসেন ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইবাংলা/ জেএন/ ২ এপ্রিল, ২০২২