ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের মূলহোতা পৌর কাউন্সিলর হারুন মল্লিকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশের কাছে দিয়েছে স্থানীয়রা। ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালক বিল্লাল খান বাদী হয়ে মাদারীপুরের ডাসার থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেছেন।
পরে শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হোসেন দুজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে রোববার শিশু আদালতের প্রেরন করা হয়। পৌর কাউন্সিলর হারুন মল্লিকের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক ইজিবাইক-সিএনজি চুরির মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটা বাস স্টান্ড থেকে শুক্রবার দুপুরে বিল্লালের ইজিবাইক ভাড়া করে ইজিবাইক চোর চক্রের এক সদস্য। কিছুদূর যেতেই ইজিবাইক চালককে জুস খেতে দেয় চোর চক্রের এক সদস্য। জুস খেয়ে বিল্লাল কিছুটা অসুস্থতা বোধ করলে তাকে পাশের সিটে বসতে বলে ইজিবাইক ছিনতাইকারী ওই সদস্য।
একজন ইজিবাইক চালিয়ে মস্তফাপুরের দিকে আসতে থাকে। তখন ইজিবাইকের সামনে ও পিছনে দুটি মটরসাইকেলে ৪-৫ জন লোক ছিল এই চক্রের। ডাসার থানার পান্তাপাড়া নামকস্থানে আসলে ভুক্তভোগী বিল্লাল বুঝতে পারে সে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছে। তখন সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে।
পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো পটুয়াখালী উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের চান্দু মল্লিকের ছেলে ও বাউফল পৌসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হারুন মল্লিক(৪০)।
ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানার শনির আখড়া এলাকার মিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (৩৮) ও পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ গ্রামের ফোরকার বেপারীর ছেলে মনোয়ার বেপারীর (১৫)। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিল্লাল ডাসার থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
খোকন বেপারী নামে এক ভুক্তভোগী জানায়, এক মাসে আমার দুটি গাড়ি চুড়ি হয়েছে। যারা আটক হয়েছে ওদের রিমান্ডে নিলেই আরও কারা জাড়িত জানা যাবে। আমরা বাউফলে খবর নিয়ে দেখেছি। এক বছর আগে চট্রগ্রামে সিএনজি ছিনতাইকালে আটক হয় এই কাউন্সিলর। তার এই অপকর্মের কালো টাকায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে।
আটক কাউন্সিলর হারুন মল্লিকের বরিশালের বিবিপুকুর পাড়, একটি ক্লিনিক, বরিশালের দ্বিতল ভবন, দুটি হাইয়েচ, দুটি বলগেট রয়েছে তার। হারুনের এই অঢেল সম্পত্তি যেন আলাউদ্দিনের চেরাগকেও হার মানিয়েছে। হারুন ও শাহ আলম, সিন্ডিকেট জালের মত ছড়িয়ে আছে সারাদেশে।
এরা লঞ্চ,বাসে যাত্রীদের অচেতন করে সর্বস্ব লুট করে নেয়। সড়কে যাত্রী বেসে উঠে অসহায় অটো চালক, সিএনজি চালকদের অচেতন বা ছিনতাই করে, তাদের উপার্জনের অটো, সিএনজি লুট করে পালিয়ে যায়। পরে আবার ওই অটো, সিএনজির, মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে, টাকা হাতিয়ে ফেরত দেয়।
এতে চালকরা তাদের উপার্জনের সম্বল হারিয়ে পথে পথে ঘুরছে।হারুন বরিশালের ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করছে হর হামেসা। তবে ওই নেতাকে সে হোটেল শ্রমিক লীগের নেতা বলে পরিচয় দেয়। প্রতারক হারুন মল্লিক ওরফে চোরা হারুন।
মামলার বাদী বিল্লাল খান বলেন, আমার গাড়ী রিজার্ভ করে চোরচক্র। প্রথমে বুঝতে পারিনি। আমাকে জুস খেতে দেয় । আমি জুস খেয়ে অসুস্থ হতে থাকি। আমাকে বলে ওরা গাড়ি চালিয়ে নিয়ে আসছিল। পান্তাপাড়া এসে আমি বুঝতে পারি ওরা অজ্ঞান পার্টির লোক। তখন চিৎকার দিলে স্থানীয়রা চোরদের আটক করে। আমি মামলা করেছি।
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, ইজিবাইক চোর চক্রের তিনজনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে থানায় মামলা করলে তাকে আমরা কোর্টে প্রেরণ করি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইবাংলা/ টিএইচকে/ ৩ এপ্রিল, ২০২২