বয়োজ্যেষ্ঠ ও স্বাস্থ্যসম্মত বার্ধ্যক্যের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি’ (DIGITAL TECHNOLOGIES FOR OLDER PERSON AND HEALTHY AGEING) এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতিসংঘের টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল প্রযুক্তিখাত বিষয়ক বিশেষায়িত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের ন্যায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে পালিত হচ্ছে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস।
বাংলাদেশ প্রতি বছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস পালন করে আসছে। প্রতিবছরের মতো এবছরেও দিবসটি উপলক্ষ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সম্প্রচারিত হবে।
এছাড়াও রোড-শো ও আলোচনা সভাসহ বিস্তারিত অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। ডিজিটাল সংযোগ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির বিপুল সম্ভাবনা এবং একে সমাজ ও অর্থনীতির কল্যাণে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সকলকে সচেতন করাই দিবসটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বিবৃতি দিয়েছেন। মন্ত্রী দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার (১৬ মে) এক বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণ।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারে গৃহীত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন।
এর ফলে শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে ১৯৬৯ সালে বিশ্বে শুরু হওয়া ইন্টারনেট ভিত্তিক শিল্প বিপ্লব বা তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের যাত্রা শুরু হয়। এর আগে কৃষি ভিত্তিক এই ভূখণ্ডে লাঙ্গল জোয়াল ছাড়া আর কোন প্রযুক্তি ছিল না বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত।
মন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছর দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রে আবার থমকে যায় তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের অভিযাত্রা। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ যান্ত্রিক যুগের শিল্পায়নেও যুক্ত ছিলো না উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের বঙ্গবন্ধু বপন করা বীজ অঙ্কুরিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে চারা গাছে পরিণত হয়।
২০০৮ সালে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনীতিক শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে ও গত সাড়ে তের বছরের বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। করোনাকালে প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটিও মোবাইলে ক্লাস করেছে।
ডিজিটাল সংযোগ করোনায় থমকে যাওয়া জীবনধারা সচল রেখেছে উল্লেখ করে শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রনায়ক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বে ডিজিটাল সক্ষমতার নজীর স্থাপন করেছে। দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এমনকি দুর্গম দ্বীপ, চর ও হাওরাঞ্চলেও ফাইভ-জি কানেক্টিভিটি দেওয়ার সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।
২০১৯ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সামিট অন দি ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস)-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারি প্রথম বাংলাদেশি জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৩ সালে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব সম্মেলনে তৎকালিন সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করেননি।
এমনকি পরবর্তি ফলোআপ সম্মেলনে পর্যন্ত অংশ নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তথ্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সেই ধাপ অতিক্রম করে ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী ১৭ মে বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের এক অনন্য দিন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাঙালি জাতির জন্য এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পঁচাত্তর পরবর্তী ছয়বছরের লড়াই, দু:খ-কষ্ট, নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশে পদার্পন করেছিলেন।
তিনি ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মতো দু:সাহসিক ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কর্মসূচি না নিলে আজকের এই বাংলাদেশ আমরা পেতাম না বলে উল্লেখ করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
প্রথম আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাফ কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন ( আইটিইউ) প্রতিষ্ঠার স্মারক হিসেবে ১৯৬৯ সালের ১৭ মে হতে প্রতি বছর বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
প্রথম আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাফ কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন ( আইটিইউ) প্রতিষ্ঠার স্মারক হিসেবে ১৯৬৯ সালের ১৭ মে হতে প্রতি বছর বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সাল হতে ১৭ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ইবাংলা/টিএইচকে/১৭ মে, ২০২২