জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য শান্ত চত্বরে ১৫ জুন (১আষাঢ়) সারাদিনব্যাপী ‘এসো করো স্নান নবধারা জলে’ প্রতিপাদ্যে ‘বর্ষাকল্প’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা ও নাট্যজন মাসুম আজিজ এবং উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি, সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী মাহমুদ সেলিম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারার অধ্যাপক ড.কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছুই নাই তবুও যা আছে তাতেই শিক্ষার্থীরা একটু বৃষ্টি হলেই নিজেদেরকে শৈশবে হারিয়ে ফেলেন যা দেখে খুব স্মৃতি মনে পরে যায়।আমাদের আছে কৃষ্ণচূড়া গাছ যার নিচে তারা গান গায়,বৃষ্টিতে ভিজে।
এত সীমাবদ্ধতার মাঝেও বৃষ্টি হলে তারা খুব উৎফুল্ল থাকে। তিনি আরো বলেন মূলত সাংস্কৃতিক বিষয়কে মোকাবেলার জন্যই উদীচির জন্ম। এছাড়া দেশের স্বাধীনতায় উদীচি শিল্পী গোষ্ঠীর অবদান অনেক। এমনকি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর এগিয়ে আসে উদীচি, তারাই কেরানীগঞ্জ এ প্রতিবাদস্বরূপ একটি নাটক মঞ্চায়ন করেছিল।
তিনি আরো বলেন,আমার বয়স বেশি হলেও বর্ষাকাল আসলে আমিও আন্দোলিত হই, আমার প্রিয়জনেকে খুব অনুভব করি, বৃষ্টি হলে আমি আমার স্ত্রীকে মনে করি মাধবী।
প্রিয়তমাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “ঢাকার আকাশ আজ মেঘাচ্ছন্ন মধবী তুমি বাইরে যেয়ো না মাধবী তুমি বৃষ্টিতে মাধবী বৃষ্টিতে তুমি বাইরে যেয়েও না”
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুজ আজিজ বলেন, যে গান মানুষের কথা কইতে পারে না সে গান আমি গাইতে পারি না উদীচি একটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে থেকেই জন্ম আমরা মনে করি শিল্প সংস্কৃতি লালন করা জরুরি। উদীচি চিরজীবি হউক।
তিনি বলেন আজকে বর্ষা কিন্তু ঢাকায় ভিজতে পারলাম না।এখানে বসে বর্ষার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যাবে না আমাদের বর্ষাকে উপভোগ করতে হলে গ্রামীন পরিবেশে যেতে হবে। যেকোনো অপসংস্কৃতিকে মোকাবেলা করার জন্য গ্রীষ্ম, বর্ষা বৈশাখ এই উৎসবে এই আয়োজন ধরে রাখা দরকার।
এই খ্যাতিমান নাট্যঅভিনেতার স্ত্রী নাট্যঅভিনেত্রী সাবিহা জাহান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর চমৎকার এই অনুষ্ঠানে এসে খুব ভালো লাগতেছে এর আগেও আমি এখানে এই ধরনের প্রোগ্রামে এসেছি, আমি এখনো বৃষ্টি হলে নিজেকে রাখতে পারি না বৃষ্টি আসলেই বৃষ্টিতে ভিজতে খুব ভালো লাগে।
অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উদীচী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নানাবিধ পরিবেশনার পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্ত সংসদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর অংশগ্রহণে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত আবোল তাবোল, ট্রাভেলার্স, স্বপ্নবাজি, রিজেক্টেড ও মনের মানুষ ব্যান্ডদলগুলোর সংগীত পরিবেশন করে।
উল্লেখ্য, এবারের আয়োজনটি সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে ঘটে যাওয়া অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহত সকল মেহনতী মানুষের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
ইবাংলা / জেএন / ১৬ জুন,২০২২