নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অদম্য যোদ্ধা তারিফ মাহমুদ চৌধুরী, তৃণা আক্তার সেতু ও আকাশ দাস। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন তারা। কিন্তু তা তাদের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় বাধা হতে পারেনি। শনিবার (১৩ আগস্ট) অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় জবি কেন্দ্রে অংশ নিয়েছেন তারা।
চিকিৎসক মিতা শবনমের তত্ত্বাবধানে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষা দিয়েছেন এই অদম্য শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের সহযোগী হিসেবে তিন ব্যক্তিকে নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তারিফ মাহমুদ চৌধুরী জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। রাজবাড়ী বেগগাছি মুজাম্মেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি ও ২০২১ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ। তবে এই বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক নন তিনি।
তারিফ মাহমুদের মা আফরোজা খান মজলিশ বলেন, তারিফ জন্ম থেকেই ত্রুটিপূর্ণ। তবে পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ অনেক বেশি। একইভাবে অন্যান্যদের তুলনায় সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থী আকাশ দাস। তার বাড়ি নরসিংদী। নরসিংদীর মৌলভি কারারচর তোফাজ্জেল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও মিরপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তার ইচ্ছা ভালো একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।
অপর আরেকজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তৃণা আক্তার সেতু। তিনি এসেছেন গোপালগঞ্জ থেকে। লোহাচূড়া আলিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে পড়া শেষে ভর্তি হন মোকছেদপুর সরকারি কলেজে। এবার তিনি দ্বিতীয় বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রথমবার কোথাও ভর্তির সুযোগ না পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো প্রস্তুত করেছেন নিজেকে।
তৃণার বড় ভাই সোহেল খান বলেন, জন্ম থেকেই আমার বোন ত্রুটিপূর্ণ। তবুও ওর ইচ্ছার কারণে সে অদম্য। আরেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ পরীক্ষা দিয়েছে নতুন ভবনে। তার এক পা বিকলাঙ্গ তাই স্ট্রেচারে ভর করেই তাকে হাটতে হয় কিন্তু তার অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মেনেছে সব তার বন্ধুকে সঙ্গী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এসেছে পরীক্ষা দিতে এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সুমন।
ইবাংলা/জেএন/১৪ আগস্ট,২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.