বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে মিয়ানমারের ফের নিক্ষেপ করা ৫টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণস্থলে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শূণ্যরেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা দিল মোহাম্মদ। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন। তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
মর্টার শেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নোম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসকারী মনির আহমেদের ছেলে। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়। এরপর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন…অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শূন্য রেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে এসে পড়ে ৩টি মর্টার শেল। ক্যাম্পের নিটকর্বতী এলাকায় এসে পড়ে আরো ২টি। ৫টি মর্টার শেল পরপর বিস্ফোরিত হয়েছে।
আরেক রোহিঙ্গা নেতা আরিফ জানান, আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উদ্ধার করে কুতুপালংস্থ এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিস্ফোরণের পর রাত পৌনে ৯টার দিকে মিয়ানমারের একটি জেট বিমান তুমব্রু বাজারের উপর এসে চক্কর দিয়ে গেছে। এসব কারণে আতঙ্ক বিরাজ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এমন সংবাদ পেয়ে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে পুলিশ টিম পাঠানো হয়েছে। তবে, এলাকাটি এপিবিএনের নিয়ন্ত্রণাধীন।
এ বিষয়ে বিজিবি ও এপিবিএনসহ অন্য সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে বিকেলে সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি এক যুবক আহত হন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম জানান, শুক্রবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের সংলগ্ন মিয়ানমারের ১০০ গজ অভ্যন্তর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় আহত অংথোয়াইং তঞ্চঙ্যা (২২) নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়ার অঙ্গোথোয়াই তঞ্চঙ্যার ছেলে।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে নিন্মমানের মালামাল ব্যবহার
বিস্ফোরণে আহত অংথোয়াইংয়ের একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আশিকুর রহমান।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, সীমান্ত এলাকায় গরু চড়াতে যান অংথোয়াইসহ স্থানীয় কয়েক যুবক। এক পর্যায় গরু সীমান্তের শূণ্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এসময় গরু ফিরিয়ে আনতে সেখানে গেলে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ইবাংলা/টিএইচকে/১৬সেপ্টেম্বর,২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.