ভারত থেকে ৩১ বছর পরে পিতৃালয়ে,জন্মস্থান হলেও ভিসা নিয়ে আসতে হলেন বামনায়

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা :

ভারত থেকে ৩১ বছর পরে স্ত্রী,২ মেয়ে ও এক ছেলেসহ অবশেষে পিতৃালয়ে এলেন হারিয়ে যাওয়া শাহ জালাল। তাও আবার এক মাসের ট্যুরিষ্ট্র ভিসা লাগিয়ে আসতে হয়েছেন। গত ৩১ বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে অবশেষে মা-বাবাকে খুঁজে পেয়েছেন এ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া জালাল।

আরও পড়ুন…উখিয়ায় ২ রোহিঙ্গা নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

বরগুনার বামনা উপজেলা সদরের কলাগাছিয়া গ্রামের আব্দুর রব মিস্ত্রির আট বছরের শিশু সন্তান শাহ জালাল আহম্মেদকে লেখাপড়ার জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে দেওবন কওমি মাদরাসায় পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকে কিছুদিন পরই হারিয়ে যান জালাল ।

আজ শনিবার সকালে দৈনিক নয়াদিগন্তকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বশিরুল আলম।
এর আগে মঙ্গলবার তিনি ভারতের কর্ণাটক প্রদেশ থেকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে ফিরেন। বর্তমানে তিনি বামনায় মা-বাবার সঙ্গে আছেন। ছেলের সঙ্গে পুত্রবধূ ও তিন নাতিকে পেয়ে খুশির শেষ নেই বৃদ্ধ মা-বাবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে দেওবন কওমি মাদরাসায় লেখাপড়া করতে গিয়ে আট বছর বয়সে সেখান থেকে হারিয়ে যান শিশু জালাল আহম্মেদ। পরে একটি এতিমখানায় তার লেখাপড়ার সুযোগ হয়। তবে কোনো বৈধ উপায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তার। এতিম খানায় কাটতে থাকে বছরের পর বছর। এক সময় সেখানে পড়ালেখা শেষে এতিম খানার পক্ষ থেকে কর্ণাটক রাজ্যের একটি মসজিদে ইমামতি করতে পাঠানো হয় তাকে। ওই রাজ্যের নাগরিকত্বও লাভ করেন জালাল। তখন সেখানেই বিয়ে করেন সেখানকার এক মুসলিম পরিবারে।

বর্তমানে দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সুখের সংসার কর্ণাটকে। মা-বাবা, স্বজন কিংবা কোনও প্রতিবেশীর ফোন নম্বর না থাকায় গত ৩০ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি।
তার ছোট ভাই খোকন জানান, গত বছরের মে মাসে বামনার স্থানীয় একটি ফেসবুক পেজে জালালের ছেলের ফেসবুক আইডি থেকে জানানো হয় তার বর্তমান অবস্থান। পরে খোঁজ করা হয় তার পরিবারের। গত ২৭ মে খোঁজ মেলে পরিবারের সদস্যদের।

আরও পড়ুন…আমাদের সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সারথী আবৃত্তি একাডেমী

জালালের আহম্মেদের বাবা আব্দুর রব মিস্ত্রি বলেন, ছেলেটা আমার বুকে ফিরে আসছে। আমি আর কিছু চাই না।
এ বিষয়ে জালাল আহম্মেদ বলেন, ভারতে পড়াশোনা করতে গিয়ে নিঁখোজ হয়েছিলাম। আমার ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুবাদে ফেসবুকে বামনার একটি পেজের সন্ধান পাই। এরপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। তারাই আমাকে মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।স্থানীয় ওই ফেসবুক পেজটির একজন মডারেটর গোলাম রেদোয়ান রাব্বি।

ইবাংলা/জেএন/১৫ অক্টোবর ২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us