নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ধারাবাহিকতা যেন সোনার হরিণ। কিছুতেই নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না বাঁহাতি এই ব্যাটার।রোববার (৪ ডিসেম্বর) ভারতের বিপক্ষে মোট ১৮৭ রান তাড়া করতে নেমেও দেখেশুনে খেলতে পারলেন না। দীপক চাহারের করা ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরলেন স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়ে। ১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫ রান। এনামুল হক বিজয় ৫ আর অধিনায়ক লিটন দাস শূন্য রানে অপরাজিত আছেন।এর আগে সাকিব আল হাসান আর এবাদত হোসেনের বোলিং তোপে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় রোহিত শর্মার দল।
আরও পড়ুন…সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পাওয়া অধিনায়ক লিটন দাস। মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে বোলিং উদ্বোধন করান তিনি। কাটার মাস্টার প্রথম ওভারে দেন মাত্র ১ রান।
এরপর হাসান মাহমুদ, মেহেদি হাসান মিরাজরাও বোলিংয়ে এসে চাপ ধরে রাখেন। ফলে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে উইকেটের দেখাও পায় বাংলাদেশ। মিরাজকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন শিখর ধাওয়ান, বলটা ব্যাটে লেগে লাগে স্টাম্পে। পড়ে যায় বেল। ভাঙে ভারতের উদ্বোধনী জুটি।
মাত্র ৭ রান করেই সাজঘরের পথ ধরেন ধাওয়ান। দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। এরপর দেখেশুনে খেলে দলকে কিছুটা পথ এগিয়ে নেন কোহলি আর রোহিত। ১০ ওভারে ভারত তোলে ১ উইকেটে ৪৮ রান। একাদশতম ওভারে এসে জোড়া শিকার করে ভারতকে ফের চাপে ফেলে দেন সাকিব। ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দুই স্তম্ভ রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলিকে তিন বলের মধ্যে সাজঘরে ফেরান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
আরও পড়ুন…চট্টগ্রাম জনসভা মঞ্চে শেখ হাসিনা
ওভারে দ্বিতীয় বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলিয়ে রোহিতকে (৩১ বলে ২৭) বোল্ড করেন সাকিব। এক বল বিরতি দিয়ে ফেরান কোহলিকে। ওই উইকেটে অবশ্য অবদান বেশি বলতে হবে লিটনের। এক্সট্রা কভারে বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নেন লিটন। কোহলি (৯) যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
৪৯ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে জুটি গড়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার আর লোকেশ রাহুল। তাদের ৫৬ বলে ৪৩ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙেন এবাদত হোসেন। ২০তম ওভারের শেষ বলে এবাদতের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে বল সোজা আকাশে তুলে দেন আইয়ার (২৪)। উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম নেন সহজ ক্যাচ। ৯২ রানে ভারত হারায় ৪ উইকেট।
একশর আগে ৪ উইকেট হারানো দলকে টেনে তুলছিলেন লোকেশ রাহুল আর ওয়াশিংটন সুন্দর। ৭৫ বলে তারা ৬০ রান যোগ করলে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। তবে সাকিবের ঘূর্ণিতে ফের কোণঠাসা হয়ে পড়ে সফরকারিরা। সুন্দরকে সাজঘরে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পয়েন্টে এবাদতের ক্যাচ হন সুন্দর (১৯)।
এরপরের ওভারে এবাদত নিজেই আঘাত হানেন। এবার তাকে সাহায্য করেন সাকিব। শাহবাজের (০) একদম নিচু হয়ে যাওয়া ক্যাচ কভারে দারুণ দক্ষতায় তালুবন্দী করেন। তার পরের ওভারে সাকিব বোল্ড করে ফেরান শার্দুল ঠাকুরকেও (২)। ওই ওভারেই দুই বল পর চাহালকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ফাইফার পূরণ করেন সাকিব। ১৫৬ রানে ৮ উইকেট হারানো ভারতের শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন লোকেশ রাহুল।
আরও পড়ুন…বস্ত্রখাতে বিশেষ অবদানের পুরস্কার পাচ্ছে ১০ প্রতিষ্ঠান
এবাদতের শর্ট বলের ফাঁদে শেষ পর্যন্ত তিনিও ধরা পড়েন। থার্ড ম্যানে সহজ ক্যাচ নেন এনামুল বিজয়। ৭০ বলে গড়া রাহুলের ৭৩ রানের ইনিংসে ছিল ৫ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কার মার। সাকিব ৩৬ রান খরচায় নেন ৫টি উইকেট। ৪৭ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন এবাদত।
ইবাংলা/জেএন/৪ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.