গর্ভাবস্থায় যে কারণে নেবেন দাঁতের যত্ন, কীভাবে নেবেন?

লাইফস্টাইল

আমরা যেহেতু সামাজিক ও সামাজিক বন্ধনে নিজেদের পারিবারিক বন্ধন কে সম্প্রসারিত করি সেহেতু আমাদের প্রত্যেক বিবাহিত পিতা-মাতার সর্বাধিক চাহিদা থাকে একজন সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া ও তার সুষ্ঠ লালনপালন।প্রেগন্যান্সি জীবনে অনেক ক্ষেত্রেই হঠাৎ করে আসে।

কিংবা অনেক সময় পরিকল্পনা করে সন্তান নেওয়ারও ইচ্ছে থাকে সে জন্য বর্তমানে প্রত্যেক সচেতন পিতা-মাতাই আগত সন্তানের একদম শুরু থেকেই বলা যায় গাইনোকোলোজীস্ট।ওই সময় গর্ভবতী মায়ের জন্য দাঁতের যত্নও খুবই জরুরি।

নিউট্রিশনিস্ট থেকে শুরু করে সন্তান লালনপালন সংক্রান্ত অনেকের সাথে পরামর্শ নিয়ে থাকি। কিন্তু যে বিষয়টি আমাদের মাথায় আসেই না তা হলো একজন ডেন্টাল সার্জন এর কাছেও পরামর্শ নেওয়া। বিষয়টি শুনে অনেকেই অবাক হয়ে যায়। সন্তান ধারণের সাথে ডেন্টাল সার্জন এর কি কাজ? প্রশ্ন টা এখানেই।

আরও পড়ুন…‘পাঠান’ নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে শাহরুখ

আমি আমার মোটামুটি দীর্ঘ এই প্র্যাকটিস লাইফ এ দেখেছি, প্রচুর প্রেগন্যান্ট নারীকে যারা প্রচণ্ড দাঁতের ব্যথা নিয়ে এসেছে আমাদের কাছে অথচ আমরা তেমন কোন চিকিৎসা দিতে পারতেছিনা কারণ হয় তো উনারা ১ম ট্রাইমেস্টার বা ৩য় ট্রাইমেস্টার। যত টুকু সম্ভব হয় তা হলো ২য় তে।

যার ফলে তাদেরকে দেওয়ার মত চিকিৎসা বা ঔষধ পর্যাপ্ত থাকার পড়েও একদম ব্যথা মুক্ত চিকিৎসা দেওয়াটা আমাদের দ্বারা সম্ভব হয় না অনেক ক্ষেত্রে। ব্যথায় জন্য প্রচণ্ড কষ্টে ভুগেন তারা, খাবারে ঘাটতি হয়, যার দরুন অনাগত সন্তান অপুষ্টি নিয়েই জন্মগ্রহণ করেন। তার থেকে বড় কথা হচ্ছে প্রেগ্নেন্সি তে প্রত্যেক গর্ভবতী মায়েদের অনেক কিছু পরিবর্তন আসে যেগুলোর জন্য উনাদের মুখে ও দাঁতে অনেক প্রভাব আনতে পারে।

কি কি হতে পারে?
১) গর্ভাবস্থায় সর্ব প্রথম পরিবর্তন আসে কিছু হরমোনের। ইসট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন এর ফলে শরীরে আসে অনেক ধরনের পরিবর্তন। যেগুলো সরাসরি মাড়ি ও দাঁতে উপর প্রভাব ফেলে। মাড়ি থেকে রক্ত পরে। মাড়ি ফুলে যায়। অনবরত রক্ত যাওয়া টা শরীরের হীমোগ্লোবীণ এর উপর প্রভাব ফেলে।
২) খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে যায়। সব সময় দাঁত ব্রাশ করা হয় না। তা ছাড়া মাড়ি নরম হয়ে যাওয়ার ফলে ঠিক মত দাঁত ব্রাশ করতে পারেনা। যা সরাসরি প্রভাব ফেলে দাঁত এর উপর। তৈরি হয় নতুন নতুন কেভিটি।
৩) অনেক ক্ষেত্রে আগে থেকেই কেরিজ দারা আক্রান্ত দাঁত থাকে, যেগুলো প্রেগনেন্সির অনিয়মিত অভ্যাস এর কারণে আরও দ্রুত ছড়িয়ে যায় আর শুরু হয় তীব্র ব্যথা।
৪) শুধু তাই নয়, মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং নিয়মিত রক্ত ও খাবার জমে ইনফেকশন হয়, আলগা হয়ে যায় মাড়ি, যার ফলে অনেক সময় দাঁত নড়ে যায় এমনকি পড়েও যায়। শুধু তাই নয়, নড়ে যাওয়া দাঁত দিয়ে কোন খাবারও চিবানো যায় না।
৫) এ ছাড়া আরেক টি প্রবলেম হচ্ছে প্রেগনেন্সিতে বমি বা বমিভাব টা বেশি হয়, যার ফলে মুখে এসিডিক ভাবটা বেড়ে যায়, ক্ষয় হয় দাঁতের নরম জায়গা এবং যার ফলে শুরু হয় প্রচণ্ড শিরশির ।
৬) সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি। যা পরবর্তী নবজাতকের দাঁতে স্থায়ী ভাবে সমস্যা তৈরি করে থাকে।

আরও পড়ুন…স্টোর অফিসার হিরার রাজউক অনুমোদনহীন অবৈধ ভবন নির্মাণ

এ ছাড়াও আরও অনেক ধরনের পরিবর্তন হতে পারে প্রেগনেন্সিতে, এই জন্য আমার ব্যক্তিগত ভাবে পরামর্শ থাকবে যে যখন ই ফ্যামিলি প্লানিং করবেন। অবশ্যই অন্য সব ডাক্তার এর সাথে সাথে একজন বিডিএস ডেন্টাল সার্জন কে দিয়ে ফুল মাউথ চেক আপ করে নিবেন। এমন কি প্রেগ্নেন্সির সময় ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন ও পরামর্শ নিবেন যা আপনার ও আপনার অনাগত ভবিষ্যৎ এর জন্য খুব বেশি জরুরী। আমরা চাই প্রত্যেক পিতামাতা জন্য দিক সুস্থ সন্তান, কারণ একজন সুস্থ সন্তান ই গঠন করবে আমাদের একটি সুস্থ সুন্দর নিরাপদ জাতি।

ইবাংলা/জেএন/১৫ ডিসেম্বর, ২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us