কিছু দেশ মহামারী প্রতিরোধ নিয়ে অপরাজনীতি করছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আরো বেশি একতা ও সহযোগিতা বিশ্ব প্রত্যাশা করে গত বছরের শেষ দিকে, দেশের মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করেছে চীন। এরপর দেশের আর্থ-সামাজিক শৃঙ্খলা আরো দ্রুতগতিতে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সমাজ ব্যাপকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করে, এটি বিশ্ব অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ আগে মুখে চীনকে ‘খুলে দেওয়ার’ দাবি জানালেও এখন কিছু নেতিবাচক মন্তব্য করছে। তারা বলেছে, চীনে ‘করোনা ভাইরাসের নতুন উপধরণ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’। এর অজুহাতে তারা ঘোষণা করেছে যে, চীন থেকে আসা যাত্রীদের জন্য নতুন মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন…ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে

সম্প্রতি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রবন্ধে একাধিক মহামারী বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘এটি অর্থহীন’। মার্কিন সরকারের এহেন আচরণের সমালোচনা করে তারা বলেন, ‘বিজ্ঞানসম্মত আচরণ-বিরুদ্ধ, অযৌক্তিক’। কিছু বিশ্লেষক বলেন, এমন আচরণ কিছু দেশের রাজনৈতিক অভিনয়। তাদের লক্ষ্য এভাবে আবারও মহামারীর দায় চীনের ওপর চাপানো।এর মাধ্যমে চীনকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা যাবে এবং চীনকে একঘরে করা যাবে।

বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, চীনে এখন করোনা ভাইরাসের উপধরণ বিএ.৫.২ ও বিএফ.৭ রয়েছে। এ দু’টি উপধরণ আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছিল। তার অর্থ, যে-কোনো স্থানে নতুন উপধরণ দেখা দিতে পারে। তাহলে, চীন থেকে যাওয়া যাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার অর্থ কি? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জনৈক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বর্তমানে ওমিক্রন করোনাভাইরাসের ৫০০টিরও বেশি উপধরণ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক সংবাদে বলা হয়, ‘ওমিক্রনের একটি নতুন উপধরণ এক্সবিবি.১.৫ এখন নিউ ইয়র্ক ও দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে’। একাধিক দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চীন থেকে আসার যাত্রীদের ‘প্রবেশ সীমাবদ্ধ’ করার ব্যবস্থা অপ্রয়োজনীয়। কিছু পশ্চিমা দেশের এহেন আচরণের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটা মহামারী প্রতিরোধের বাস্তবতার প্রতি অবহেলা এবং অকার্যকর পদক্ষেপ।

বিশ্ববাসীর স্পষ্টভাবে মনে আছে, তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ চীনের মহামারী প্রতিরোধ নীতি নিয়ে অপরাজনীতি করেছে। চীন কঠোর প্রতিরোধ পদক্ষেপের মাধ্যমে কার্যকরভাবে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করেছে। সে সময় কিছু পশ্চিমা দেশ ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছিল এবং ঘনঘন চীনকে বিধি-নিষেধ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। এমনকি, এতে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিল।

তবে, মহামারী পরিস্থিতি অনুসারে চীন তার প্রতিরোধ- ব্যবস্থা পরিবর্তন করার পর, কিছু পশ্চিমা দেশের রাজনীতিক ও তথ্যমাধ্যমে বলেন যে, চীনের মহামারী পরিস্থিতি অন্য দেশের মহামারী প্রতিরোধের জন্য ‘হুমকি’ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি, তারা বাস্তবতা ও বৈজ্ঞানিক চেতনা উপেক্ষা করে চীনের যাত্রীদের ‘প্রবেশ সীমাবদ্ধতা’ ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ধরনের দ্বৈত নীতি নিছক ভণ্ডামি!

আসলে কিছু পশ্চিমা মানুষ মনে করে, চীন যা-ই করুক না-কেন তা সঠিক নয়। রাজনৈতিক অভিনয়ের মাধ্যমে তারা নতুন দফা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করছে। এমন আচরণ বৈশ্বিক মহামারী প্রতিরোধে বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
‘তিন বছর! থাইল্যান্ড আপনাদের জন্য তিন বছর ধরে অপেক্ষা করছে!”

আরও পড়ুন…বিএনপির আন্দোলনের হুমকিতে আওয়ামী লীগ ভয় পান না :কাদের

বিভিন্ন দেশের পর্যটন ব্যুরো ও চীনে নিযুক্ত দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনের পর্যটকদেরকে এভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এ হচ্ছে বিশ্বের প্রধান কণ্ঠস্বর। কিছু দেশ মহামারী প্রতিরোধ নিয়ে অপরাজনীতি করছে। তাদের এহেন আচরণ বিশ্ববাসীর সমর্থন করে না। বরং, আরো বেশি একতা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে গোটা বিশ্ব। সূত্র: আকাশ, সিএমজি।

ইবাংলা/জেএন/৫ জানুয়ারি, ২০২৩

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us